গাজীপুরে হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক, ঘরে ঘরে ঝুলছে তালা
Published: 9th, February 2025 GMT
গাজীপুর নগরের আক্কাস মার্কেট থেকে টঙ্গী-জয়দেবপুর সড়ক ধরে কিছুদূর সামনে এগোলে হাতের ডানে দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি। গাছপালায় ঢাকা বাড়িটির মূল ফটকে ঝুলছে দুটি তালা। বাড়ির সামনেই পড়ে আছে ভাঙা কাচ, কাঠ ও সিরামিকের ছোট ছোট টুকরা। বাড়ির আশপাশে স্থানীয় বাসিন্দাদের ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি। প্রায় প্রতিটি বাড়িই ফাঁকা। ফটকে ঝুলছে একাধিক তালা। সদাব্যস্ত সড়কটিতে নেই মানুষ বা যানবাহনের চলাচল। এ চিত্র গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার।
গত শুক্রবার রাতে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো দাক্ষিণখান এলাকায়। পুলিশি হয়রানি বা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছেন এলাকার অনেক বাসিন্দা। এর ফলে এলাকাটির বেশির ভাগ বাড়িতেই ঝুলছে তালা। রাস্তাঘাটেও নেই তেমন লোকজন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, ঘটনার রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। গতকাল ভোর থেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান অনেকে।
আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক ডেকে মারধরে আহত ১৫০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মোজাম্মেল হকের বাড়ির পশ্চিম পাশে স্থানীয় আবুল বাছেতের বাড়ি। টিনশেড বাড়িটির মূল ফটক বন্ধ। বেশ কয়েকবার ফটকে নাড়া দেওয়ার পর বেরিয়ে আসেন বাছেতের স্ত্রী ষাটোর্ধ্ব কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, ‘গতকাল এশার নামাজের পর হঠাৎ হুনি (শুনি) ভাঙচুরের শব্দ। মসজিদের মাইকে হুজুর মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়ছে বইল্যা ঘোষণা দেয়। এরপর হুড়মুড় কইর্যা মানুষ গিয়ে হামলা চালায়। পরে হুনি ছাত্ররা আহত হইসে। হেরপর থেইক্যা ডরে সবাই এলাকা ছাইড়্যা দিছে। আমরাও গেট বন্ধ রাখতাছি।’
কথা হলে মসজিদসংলগ্ন একটি বাড়ির নারী বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার রাতেই মসজিদটিতে তালা দেওয়া হয়। এর পর থেকে সেটি তালাবদ্ধ। হয়রানির ভয়ে কেউ নামাজ পড়তেও যাচ্ছেন না।
আরও পড়ুনদিনভর বিক্ষোভ, ক্ষমা চাইল পুলিশ, সন্ধ্যায় ছাত্র গুলিবিদ্ধ ৮ ঘণ্টা আগেআফিয়া বেগম নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রত্যেক দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কে মানুষ হাঁটা-চলা করে। পোলাপান খেলাধুলা করে। কিন্তু আইজক্যা কেউ নাই। দেইখ্যা মনে সব শ্মশান হইয়্যা গেছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ম ম ল হক র ব এল ক য় আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা