প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চায় না। তাঁরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়াতে চান না। তাঁরা নিরপেক্ষ থাকতে চান।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘সাংবাদিক হোসাইন জাকির বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, ‘ইলেকশন কমিশনের এত বদনাম, এত গালি দেয়। এটা কেন হলো তার ১০০টা কারণ বলতে পারবেন, ২০০টা কারণ বলতে পারবেন। আমার কাছে এক নম্বর কারণ হলো পলিটিক্যাল কন্ট্রোল অব দ্য ইলেকশন কমিশন (নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ)। এটি আমার কাছে মনে হয়েছে সবচেয়ে বড় কারণ। রাজনীতির কাছে নির্বাচন কমিশনকে সঁপে দেওয়া, এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কারণ।’

এ এম এম নাসির উদ্দীন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের ইনফ্লুয়েন্স অন দ্য ইলেকশন কমিশন (নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রভাব) বন্ধ করা না যায়, আবার সেই পুরোনো জিনিস রিপিট হবে বলে আমি মনে করি।’

এ আয়োজনে দৈনিক ইত্তেফাকের সাইদুর রহমান, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের মাহমুদুল হাসান ও বিডি২৪ লাইভ ডটকমের মেহেদী হাসান যথাক্রমে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ