খুব না হলেও আমরা অনেকের চেয়ে ভাল আছি: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 9th, February 2025 GMT
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘‘দেশের বিদ্যমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য চেষ্টা করছি। এটা বলব না আমরা খুব ভাল আছি। তবে এটা ঠিক, অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা খারাপ নেই। মোটামুটি ভালো আছি। অবশ্যই আমরা একটা কল্যাণমুখী, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র করার চেষ্টা করছি। তবে সেটা অনেক দূরে। এটা পলিটিক্যাল সরকার করবে।’’
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব। সঞ্চালনা করেন বিএআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
ড.
তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন যে তারা রাস্তাঘাট আটকে রাখে, এটা সত্য যে আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক সরকারের মত শক্তিশালী না। এখন যদি মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়, তখন দোকানিরা দোষ দেওয়া শুরু করে। এসব দিক থেকে আমরা অনেক চাপের মধ্যে আছি। ১০০টি চাপের মধ্যে আমরা ১০টি মানি। যেমন রেলওয়ের ডিমান্ড ওভারটাইম দাও, দিলাম। এরপর বলে লিমিট উঠিয়ে দাও, সেটাও উঠিয়ে দিলাম। কয়েক দিন পর বলবে, চাকরি থাকবে না বেতন দাও? তখন আমি কী করব? সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।’’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘জনগণের এখতিয়ার মানে রাজনৈতিক সমর্থন, আমরা কিন্তু ক্ষমতায় আসিনি, আমাদের দেওয়া হয়েছে। আমরা যেটা করছি, কিছু কিছু কারণ আছে, সবকিছু ভেবে চিন্তে করছি। এখানে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা আছে, এখানে রাজনৈতিক ব্যাপার আছে। তাহলে কীভাবে আমরা রাজস্ব ব্যয় কমাব? এক্ষেত্রে আমি পজিটিভ।’’
তিনি বলেন, ‘‘পেনশনটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সর্বজনীন পেনশন দেওয়ার চেষ্টা করছি। এখন বিষয়টা হচ্ছে রিসোর্স ও অ্যাওয়ারনেস। আমরা চেষ্টা করছি আরো একটু যুগোপযোগী করার। আর যারা রেমিট্যান্স পাঠায় তাদের জন্য প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রবাসীরা ফিরে আসার পর যেন পেনশনের মতো প্রবাসী বন্ডের ব্যবস্থা করা যায় কি না।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এখন ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসছে, সেখানে কিছু প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও কেউ কেউ হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠায়। আমরা ফরেন ট্রেড ওপেন করে দেব। সেখানে সমস্যা হলো দুবাই বসে হুন্ডির মাধ্যমে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমরা তাদেরটা ঠিক রেখে পুরো মার্কেট সেটেলমেন্ট করব।’’
ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।