প্রতিবছর ১১ ফেব্রুয়ারি ‘বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েদের আন্তর্জাতিক দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান দিন দিন বাড়ছে। তবে জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এই জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং। এ ক্ষেত্রে নীতিগত, সামাজিক ও শিক্ষাগত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীশিক্ষায় দেশে গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে। প্রাথমিক (৫১.
এসটিইএম শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গড়ার সময় নারীরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তার সরাসরি ফল আত্মবিশ্বাসের এই ঘাটতি। ইউনিসেফের মতে, মেয়েদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা জেন্ডার প্রেক্ষাপট দ্বারা প্রভাবিত। মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা অধিক সংখ্যায় বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী (৭৮টি দেশের মধ্যে ৭২টিতে) অথবা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে পেশাদার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী। এসটিইএমকে একটি পুরুষতান্ত্রিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা এবং মেয়েরা এসটিইএমে কী করতে পারে এবং কী করা উচিত, সে সম্পর্কে সামাজিক রীতিনীতি ও ভ্রান্ত ধারণা অভিভাবকদের প্রত্যাশাকেও প্রভাবিত করে। এগুলো এসটিইএম সম্পর্কে মেয়েদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে নারীদের উৎসাহিত করতে কার্যকর প্রণোদনার অভাব রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রয়োজনীয় স্কলারশিপ, মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের অপ্রতুলতা বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের অনেক নারী বিজ্ঞানী ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে নিজ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। যেমন গবেষণায় অবদানের জন্য ২০২৩ সালে ১০০ জন ‘সেরা এবং উজ্জ্বল’ এশিয়ান বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন দুই বাংলাদেশি নারী। তারা হলেন ডা. গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী ও ডা. সেঁজুতি সাহা। এই দু’জন ছাড়াও অনেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদাহরণ স্থাপন করেছেন। এসব সফল নারী বিজ্ঞানীর অভিজ্ঞতা ও অর্জনকে সবার সামনে তুলে ধরলে অনেক মেয়ে তাদের মতো হতে আগ্রহী হবেন।
সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্প যেমন–‘নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন’, ‘এসটিইএমে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি’ ইতোমধ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, এনজিও এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নারীদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালু করেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে রোবোটিক্স, কোডিং ও ডেটা অ্যানালিটিকসে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এসব প্রশিক্ষণ মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলছে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে।
তবুও নারীদের উল্লেখযোগ্যভাবে গবেষণার সুযোগ বাড়াতে এবং উদ্ভাবনে সম্পৃক্ত করতে বিশেষ অনুদান ও ফান্ডিং প্রোগ্রাম চালু করা প্রয়োজন। দেশের সব নারী যদি তাদের যোগ্যতা অনুসারে এই গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিজ প্রতিভা ও দক্ষতা প্রয়োগ করার সুযোগ পান, তবে তা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। তাই এ বিষয়ে দেশের সব পর্যায় থেকে আশু পদক্ষেপ নেওয়া অত্যাবশ্যক।
মো. রমজান আলী: ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার ফর এডুকেশন, ইউনেস্কো, ঢাকা অফিস;
ফাতেমা বেগম পপি: সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আয়ারল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ আশরাফুল, টিম ডিরেক্টর রাজ্জাক
এ মাসেই বাংলাদেশের আসছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। সেই সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল। এই সিরিজে টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় দলের আরেক সাবেক ক্রিকেটার বিসিবি পরিচালক ও নারী বিভাগের প্রধান আবদুর রাজ্জাক। আজ বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান আমজাদ হোসেন।
মোহাম্মদ আশরাফুল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। এই মৌসুমেই প্রথমবারের মতো বরিশাল বিভাগের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং কোচ ছিলেন ২০০১ সালে কলম্বোয় বিশ্ব কাঁপিয়ে টেস্ট অভিষিক্ত হওয়া এই ব্যাটসম্যান।
আশরাফুল যুক্ত হলেও আগের কোচিং স্টাফের সদস্যরা দলের সঙ্গেই থাকছেন। এত দিন বাংলাদেশ দলে কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ ছিলেন না। সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন এই দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বাংলাদেশ সফরে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে আয়ারল্যান্ড। সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১১ নভেম্বর, ভেন্যু সিলেট। মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ১৯ নভেম্বর। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ চট্টগ্রামে ২৭ ও ২৯ নভেম্বর। ২ ডিসেম্বর মিরপুরে শেষ ম্যাচ।