সৃজনে-মননে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশজুড়ে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজ করে চলেছে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ। এর ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালীতে সমকালের ২০ বছর উদযাপন, দুই বছরের কার্যক্রমের মূল্যায়ন এবং আগামীর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে জেলার সব সুহৃদ ইউনিটের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয় ‘সুহৃদ উৎসব’
‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে-/ডালে ডালে ফুলে ফলে পাতায় পাতায় রে,/ আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে।’ তাই নগরের প্রকৃতিতে না থাকুক, পথে পথে ঢল নামুক না নামুক লাবণ্যময় বসন্তের। শীতের শেষে এসে সুহৃদদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে খুশির আভা, বর্ণিল বসন আর চারদিকে ছড়িয়ে মিলনমেলা বলে দিচ্ছে আজ ‘সুহৃদ উৎসব’।
দিনটি ছিল শনিবার। পটুয়াখালীতে সরকারি মহিলা কলেজ মিলনায়তনে তখন সুহৃদদের আনাগোনায় মুখর। ৮ ফেব্রুয়রি বর্তমান ও প্রাক্তন সুহৃদদের অংশগ্রহণে সমকাল ২০ বছরে পদার্পণ, গত দুই বছরের কার্যক্রমের মূল্যায়ন এবং পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নিয়ে জেলার সব সুহৃদ ইউনিটের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ‘সুহৃদ উৎসব’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সম্মাননা দেওয়া, পুরস্কার বিতরণ, সাংগঠনিক আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাজানো হয়েছিল উৎসব।
উদ্বোধনী আয়োজন: শুরুতে কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সুহৃদ উপদেষ্টা সৈয়দ মো.
অতিথি আলাপন: সুহৃদ সভাপতি মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের হর্টিকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহবুব রব্বানী, পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাফর আহমেদ, বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মোদাচ্ছের বিল্লাহ, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান, পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল মালেক, সমকাল সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মাহবুব রব্বানী বলেন, ‘সমাজে এখন ভালো মনের মানুষের অভাব। সমকালের সুহৃদরা যেভাবে সৃজনশীল কাজকর্ম পরিচালনা করছেন তা আমাকে আবেগতাড়িত করেছে। এটাই হওয়া উচিত। আশা করি সুহৃদরা শুধু স্মার্ট সুহৃদই হবেন না, তারা প্রত্যেকেই হবেন একজন ভালো মানুষ। তারা হবেন সমাজের জন্য নিবেদিতপ্রাণ।’
স্বাগত বক্তব্য দেন উৎসব কমিটির আহ্বায়ক কবি ও লেখক গাজী হানিফ। ২০ বছরের কর্মকাণ্ড উপস্থাপন করেন সমকালের জেলা প্রতিনিধি ও সুহৃদ সমন্বয়ক মুফতী সালাহউদ্দিন। অনুষ্ঠানে সাবেক সুহৃদদের পক্ষে স্মৃতিচারণ করেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফারহানা ইয়াসমিন শিফা। সহকারী অধ্যাপক এলিজাবেথ বাড়ৈ, মো. নুরুজ্জামান, প্রভাষক শতাব্দী সুকুলসহ বিভিন্ন ইউনিটের নতুন ও সাবেক সুহৃদরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুহৃদ সাইয়ারা আফিয়া ঝুমুর ও জান্নাতুল ফেরদৌসি বৃষ্টি।
স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন: ২০ বছরের এ সুহৃদ উৎসবে প্রয়াত জেলা সুহৃদ সমাবেশের সাবেক সভাপতি রুমানা খান দোয়েলকে আজীবন সম্মাননা এবং যৌথভাবে বর্তমান সভাপতি মুহাম্মদ জাকির হোসেন ও উপদেষ্টা গাজী হানিফকে সম্মাননা স্মারক, তিনজনকে ‘সেরা সুহৃদ’ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলা সুহৃদ সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হক মেবিন, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সৈয়দ মো. আবদুল ওয়াদুদ, বাবুল চন্দ্র হাওলাদার, সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম ও সোনিয়া কর্মকারকে পুরস্কৃত করা হয়। সুহৃদ ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা বিকাশের লক্ষ্যে ‘প্রতিভা অন্বেষণ’ কুইজ, সাধারণ জ্ঞান, উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে প্রতিভা অন্বেষণ সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলা ও বিভিন্ন কলেজ শাখার সুহৃদদের শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়।
সাংস্কৃতিক পর্ব: ‘সাগর পারের মানু মোরা, মোগো পেপার সমকাল, কুম্মে পাইবেন মোগো মতো এত সুন্দর সুহৃদ দল’– সংগঠনের এ গানটির মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও সমাপনী পর্ব জমে ওঠে সুহৃদদের মনোমুগ্ধ গান, আবৃত্তি ও দলীয় পরিবেশনায়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষে আগামী তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন।
সুহৃদ পটুয়াখালী
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ উৎসব সমক ল র ২০ বছর কল জ র কর ন স উপস থ বছর র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডায় নির্বাচন: মার্ক কার্নির লিবারেল সদর দপ্তরে উৎসব শুরু
কানাডায় ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল আসতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কারণ, দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি বলেছে, এবার লিবারেল সরকার হতে চলেছে।
কানাডার ৩৪৩ আসনের হাউস অব কমন্সে লিবারেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি তাদের সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে মার্ক কার্নিই যে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। কানাডা সব সময় গর্বিত, সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ থাকবে এবং আমরা কখনো ৫১তম অঙ্গরাজ্য হব না।—পিয়েরে পলিয়েভর, বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতাপুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে গতকাল সোমবার ভোট দিয়েছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা দেশটিতে নির্বাচনের আগে প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি জনসমর্থন বেড়ে যায়।
লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।অথচ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক কথাবার্তা শুরু হওয়ার আগে জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পলিয়েভরের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে সামান্য পিছিয়ে ছিল কার্নির লিবারেল দল। ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলা শুরু করলে কানাডীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের জোয়ার ওঠে এবং জরিপের পূর্বাভাসে হঠাৎ বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ভোটের দিন সকালেও ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম কাঙ্ক্ষিত অঙ্গরাজ্য হয়, তবে শূন্য শুল্কের সম্মুখীন হবে।
লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে সমর্থকদের উল্লাস