মেলার উদ্বোধন শেষে বই কিনে এসপিকে উপহার দিলেন জেলা প্রশাসক
Published: 10th, February 2025 GMT
লালমনিরহাট জেলা কালেক্টর মাঠে শুরু হয়েছে তারুণ্যের উৎসব ও বিসিক উদ্যোক্তা মেলা-২০২৫। আজ সোমবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তরিকুল ইসলাম, লালমনিরহাটের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) রাজিব আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুবুর রহমান, বিসিক লালমনিরহাটের উপপরিচালক মো.
মেলার উদ্বোধন শেষে স্টল পরিদর্শনের এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার প্রথমা প্রকাশনের স্টলে এসে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সাক্ষ্য’ এবং ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান: নতুন পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামের দুটি বই কেনেন। এর মধ্যে একটি বই তিনি পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলামকে উপহার হিসেবে প্রদান করেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন ও বিসিক জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে এ তারুণ্যের উৎসব ও বিসিক উদ্যোক্তা মেলায় ৮০টি স্টল, দুটি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। আটটি জোনে বিভক্ত এ মেলায় ৬২ জন উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। মেলাটি প্রতিদিন বেলা দুইটা থেকে রাত পর্যন্ত দর্শানার্থীসহ সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আলোচনা সভা ও প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মেলা মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাহবুবুর রহমান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল।
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়