চীনে গত বছর বিয়ের নিবন্ধন এক-পঞ্চমাংশ কমে গেছে। ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যার সমস্যা নিরসনে তরুণ-তরুণীদের বিয়ের প্রতি আগ্রহী করতে এবং সন্তান নেওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দিতে চীন সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ কার্যত কাজে আসছে না বলে মত বিশ্লেষকদের।

দেশটির সামাজিক সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য, ২০২৪ সালে চীনজুড়ে ৬১ লাখের কিছু বেশি যুগল বিয়ে নিবন্ধন করিয়েছেন। আগের বছর ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭৬ লাখ ৮০ হাজার।

দীর্ঘদিন ধরেই চীনে তরুণ প্রজন্মের বিয়েবিমুখ হওয়ার বড় কারণ হিসেবে সন্তান লালনপালনের চ্যালেঞ্জ ও শিক্ষায় অতি উচ্চ ব্যয়কে কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক ধীর প্রবৃদ্ধি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করে বের হওয়া ব্যক্তিদের জন্য কাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলেছে। যাঁরা এরই মধ্যে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাও দীর্ঘ মেয়াদে সম্পর্কে জড়াতে অনিরাপদ বোধ করছেন।

আরও পড়ুনজনসংখ্যা কমে যাওয়া চীনের জন্য কতটা বিপদের২১ জানুয়ারি ২০২৩

চীনের কর্তৃপক্ষের কাছে তরুণদের বিয়ের প্রতি আগ্রহী করা এবং সন্তান জন্মদানে উৎসাহ বাড়ানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। জনসংখ্যার নিরিখে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ। সংখ্যাটি প্রায় ১৪০ কোটি। তবে দেশটিতে বয়স্কদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীনে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু ছিল। অর্থাৎ দেশটির দম্পতিরা একজনের বেশি সন্তান নিতে পারতেন না। এই নীতি ও ব্যাপক নগরায়ণপ্রক্রিয়া কয়েক দশক ধরে চীনের জন্মহার কমিয়েছে। বিপরীতে আগামী দশকগুলোয় দেশটিতে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অবসর জীবনে চলে যাবেন। এই সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় সমান।

চীনের তরুণ-তরুণীদের মনে বিয়ে, ভালোবাসা, পরিবার, সন্তানের জন্ম নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবের বিস্তার ঘটাতে গত বছর কর্তৃপক্ষ দেশটির কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লাভ এডুকেশন’ বা ভালোবাসা-সংক্রান্ত শিক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

আরও পড়ুনসন্তান লালন-পালনে অনীহা বাবাদের, ৬০ বছরে প্রথম কমল চীনে জনসংখ্যা১৭ জানুয়ারি ২০২৩

গত নভেম্বরে চীনের মন্ত্রিসভা দেশটির স্থানীয় সরকারগুলোকে জনসংখ্যাসংকট মোকাবিলায় সম্পদের বিনিয়োগ এবং ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে করা ও সন্তান নেওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর নির্দেশ দেয়। বিয়ের খরচ কমানোসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। করোনাকালের অর্থনৈতিক স্থবিরতা কাটিয়ে ২০২৪ সালে চীনে জন্মহার কিছুটা বেড়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চীনে গত বছর ২৬ লাখের বেশি যুগল বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছেন। এটা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।

আরও পড়ুনটানা দ্বিতীয় বছর কমল চীনের জনসংখ্যা, অর্থনীতিতে কী বার্তা দিচ্ছে১৭ জানুয়ারি ২০২৪আরও পড়ুনচীনে তরুণ–তরুণীদের মধ্যে বিয়ের চেয়ে ডেটিংয়ে আগ্রহ বাড়ছে কেন২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জনস খ য ন র জন

এছাড়াও পড়ুন:

অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি

জুন মাসের মাঝামাঝি আসতেই এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্য জুনে পরিস্থিতি এমন হয়নি। সে বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুও সবচেয়ে বেশি ছিল।

গতকাল শনিবার আরও ১৬৯ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। আরও একজনের মৃত্যুর কথাও বলেছে। এই নিয়ে এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ৫ হাজার ৫৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর মারা গেছেন ২৯ জন।

গত বছর এই সময়ে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ১৯৩ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এই সময়ে ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ৩৯ জন।

এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯। আর মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০৫ জন। ওই বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত

হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০২। আর ওই সময়ের মধ্যে মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন।

সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, তিন বছরের মধ্যে এ বছরের জুনে রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি রোগী বাড়ছে।

ঢাকা মহানগরে কম

অন্য প্রায় সব বছরে দেখা গেছে, ডেঙ্গু প্রকোপ প্রথমে ঢাকা শহরে বা দেশের বড় শহরগুলোতে দেখা দেয়। এরপর তা ক্রমান্বয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ বছর দেখা যাচ্ছে, বেশি রোগী ঢাকা শহরের বাইরে, বিশেষ করে বরিশাল বিভাগে। এর মধ্যে বরগুনা জেলায় রোগী বেশি। দেশের দক্ষিণের এই জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৫০ জন।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক মো. হালিমুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরগুনা শহরে ডেঙ্গু বেশি হওয়ার তিন কারণ আমরা আপাতত শনাক্ত করতে পেরেছি। পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে কোনো কাজ করেনি। শহরে জলাবদ্ধতা আছে। এ ছাড়া মানুষ বৃষ্টির পানি ধরে রাখে। এগুলো মশার বংশ বৃদ্ধিতে সহায়ক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন গুণ
  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ