কমলো জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়
Published: 10th, February 2025 GMT
দীর্ঘদিন বাড়িয়ে দেখানোর পর দেশের পণ্য রপ্তানি আয় সংশোধন করা হয় গত বছরের এপ্রিলে। সংশোধনীতে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যা ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার মতো। এত বড় অঙ্কের অর্থ কমে যাওয়ার প্রভাব মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বিবিএসের চূড়ান্ত হিসাবে, গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৪ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় কমে হয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার।
গতকাল সোমবার সামষ্টিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ নির্দেশকগুলোর চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, বিবিএসের সাময়িক হিসাব এবং চূড়ান্ত হিসাবের মধ্যে ব্যবধানটা বেশ বড়। যেমন– চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধির সাময়িক হিসাবের চেয়ে ১ দশমিক ৬০ শতাংশীয় পয়েন্ট কম। গত বছরের মে মাসে বিবিএস জানায়, সাময়িক হিসাবে গত অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এদিকে চূড়ান্ত হিসাবে গত অর্থবছরে যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা গত তিন অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছর সাময়িক হিসাবের চেয়ে চূড়ান্ত হিসাবে রপ্তানির পরিমাণ কম এসেছে ২১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরও চূড়ান্ত হিসাবে রপ্তানি সাময়িক হিসাবের চেয়ে ১৫ দশমিক ২৯ শতাংশ কম হয়। তবে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড.
জিডিপি ও রপ্তানির সম্পর্কের বিষয়টি ব্যাখ্যায় বিবিএস বলেছে, জিডিপির হিসাব প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়ের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। এ বিবেচনা থেকে গত অর্থবছরের সাময়িক হিসাব প্রাক্কলন করা হয়। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানির সংশোধিত হিসাব সাময়িক প্রাক্কলিত হিসাবের তুলনায় ২১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কম হয়েছে।
রপ্তানিতে সাময়িক ও চূড়ান্ত হিসাবের মধ্যে বড় ব্যবধান থাকলেও কৃষিতে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। সাময়িক হিসাবে কৃষির প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ৩ দশমিক ২১ শতাংশ, যা চূড়ান্ত হিসাবে বেড়ে হয়েছে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি কাছাকাছিই রয়েছে। এ খাতে সাময়িক হিসাবে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। চূড়ান্ত হিসাবে যা দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অবশ্য শিল্পের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬৬ থেকে কমে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশে নেমে এসেছে। শিল্প খাতে দুই হিসাবের মধ্যে বড় ব্যবধানের কারণও রপ্তানি খাত। বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থবছরে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ ২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৫০ লাখ ৪৮ হাজার ২৭ কোটি টাকা।
মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৩৮ ডলার
বিবিএসের চূড়ান্ত হিসাব বলছে, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার, যা সাময়িক হিসাবের চেয়ে ৪৬ ডলার কম। সাময়িক হিসাবে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার। বিবিএসের প্রতিবেদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, তিন বছর ধরে মাথাপিছু আয় কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৭৪৯ ডলার।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএলে আরও ম্যাচ বাড়ানোর পরিকল্পনা
আইপিএলে আরও ১০ থেকে ২০ ম্যাচ বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে আইসিসি ও বিসিসিআই-এর সঙ্গে আলোচনাও করছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ ও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা। তবে সবটাই সম্প্রচার স্বত্বের আগ্রহের ওপর নির্ভর করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইপিএল এখন ১০ দলের লড়াই। ২০২২ সালে দুটি নতুন ফ্রাঞ্চাইজি আনা হয়। গুজরাট ও লক্ষ্নৌ আসায় প্রতি মৌসুমে ৭৪ ম্যাচের টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইপিএল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ছিল ২০২৫ মৌসুম থেকে ম্যাচ বাড়িয়ে ৮৪তে নিয়ে যাওয়ার।
কিন্তু সম্প্রচার স্বত্বের অনীহার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। ক্রীড়া ভিত্তিক টিভি চ্যানেলগুলো জানিয়েছে, একই সময়ে আইপিএলসহ অন্যান্য ক্রীড়া ইভেন্ট থাকে। একটার পর একটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ থাকে। আইসিসির ইভেন্ট থাকে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত আইসিসি ফিউচার ট্যুর ও টুর্নামেন্ট সূচি থাকায় প্রস্তাবিত ৮৪ ম্যাচের টুর্নামেন্ট সম্ভব হয়নি। ২০২৭ সাল পর্যন্তও এটা সম্ভব হবে না।
তবে ২০২৮ সালের আসরে ৯৪ ম্যাচের আইপিএল ইভেন্ট মাঠে নামানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। যদিও কোন নতুন দল আনার পরিকল্পনা নেই তাদের। আইপিএলকে ১০ দলের টুর্নামেন্টেই রাখতে চায় কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা হলো- গ্রুপ পর্বের মতো প্লে অফেও হোম এন্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে ম্যাচ আয়োজন করা। যাতে প্রতিটি দল হোম ও অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়।
আইসিসির চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল বলেন, ‘অবশ্যই, এটা একটা সুযোগ। আমরা আইসিসি ও বিসিসিআই-এর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। যেহেতু ভক্তদের আগ্রহ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ও আইসিসির ইভেন্ট থেকে সরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দিকে যাচ্ছে, এটা কাজে লাগানোর দারুণ সুযোগ আমাদের জন্য। আমরা গুরুত্ব সহকারে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছি। ক্রিকেটের প্রাণ ভক্ত। তাদের চাওয়ার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।’
ধুমাল জানান, তারা আইপিএলের জন্য বড় একটা ফাঁকা সময় আইসিসির কাছে চান। ফ্রাঞ্চাইজির চাওয়া গ্রুপ পর্বের মতো প্লে অফেও হোম এন্ড অ্যাওয়ে ম্যাচ। সেক্ষেত্রে ৯৪ ম্যাচের টুর্নামেন্ট চাওয়া আইপিএল কর্তৃপক্ষের। অনেক খেলা থাকায় এখনই সেটা সম্ভব নয়। তবে সম্প্রচার মাধ্যম মনে করছে, আইপিএল মাঝপথে গিয়ে দর্শকের আগ্রহ হারায়। যে কারণে ম্যাচ ও সময় বাড়ালে এর আকর্ষণ ধরে রাখা নিয়ে সন্দিহান টিভি চ্যানেলগুলো।
আইপিএল শুরু হয় ২০০৮ সালে। তখন এটি ৪৪দিনের টুর্নামেন্ট ছিল এবং ম্যাচ ছিল ৫৯টি। ২০১১ সালে ১০ দলের টুর্নামেন্ট হয় ৫০ দিনে। ম্যাচ ছিল ৭৪টি। পরের দুই আসরে ছিল ৯ দল। ম্যাচ হয়েছিল ৭৬টি করে। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৮ দলের টুর্নামেন্ট হয়েছে। ম্যাচ হয়েছে ৬০টি করে। টুর্নামেন্ট ৪৬ থেকে ৫২ দিনের মধ্যে রাখা হয়েছিল। ২০২২ থেকে ১০ দলের টুর্নামেন্টে আবারো ৭৪টি করে ম্যাচ খেলানো হচ্ছে। ৬০ থেকে ৬৪ দিনে গড়িয়েছে টুর্নামেন্ট।