সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম: টিআইবি
Published: 11th, February 2025 GMT
২০২৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১৪তম। ২০২৩ সালে এই অবস্থান ছিল ১০ম।
বাংলাদেশের চার ধাপ এগিয়ে যাওয়ার কারণ এ দেশে দুর্নীতি কমেছে, তা নয়। বরং বাংলাদেশ নম্বর আরও কম পেয়েছে।
২০২৩ সালে ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৪, গত বছর পেয়েছে ২৩। মানে হলো, দুর্নীতি বাড়ায় বাংলাদেশের স্কোর ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে এক কমেছে। কিন্তু অন্য দেশ আরও খারাপ করায় সূচকে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে ডেনমার্কে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির মাত্রা ছিল দক্ষিণ সুদানে।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনালের ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪’ প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ তথ্য তুলে ধরেন। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের তথ্যের ভিত্তিতে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে।
সিপিআই অনুযায়ী, দুর্নীতির ধারণার মাত্রাকে ০ (শূন্য) থেকে ১০০ (এক শ)–এর স্কেলে নির্ধারণ করা হয়। এই পদ্ধতি অনুসারে স্কেলের ০ (শূন্য) স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতা সর্বোচ্চ এবং ১০০ স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতা সর্বনিম্ন বলে ধারণা করা হয়।
জার্মানির বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই) বিদায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান দুই ধাপ পিছিয়েছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১৫১তম। ২০২৩ সালে অবস্থান ছিল ১৪৯তম। শুধু আফগানিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার (ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ অন্যান্য দেশ) দেশগুলোর মধ্যে দুর্নীতির মাত্রা বাংলাদেশে বেশি।
সিপিআই অনুসারে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বৈশ্বিক গড় স্কোর ৪৩। অর্থাৎ বৈশ্বিক গড় স্কোরের তুলনায় বাংলাদেশ পেয়েছে প্রায় অর্ধেক। কেবল তাই নয়, গত ১৩ বছরের মধ্যে এবার সর্বনিম্ন স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা গভীর উদ্বেগজনক। আর এ বছর স্কোর ও উচ্চক্রম অনুযায়ী অবস্থানের অবনমন হয়ে প্রমাণ করে যে গত ১৩ বছর কর্তৃত্ববাদী সরকার মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও বাস্তবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে, লালন করেছে, এমনকি দুর্নীতি সংঘটনে সহায়তা ও অংশগ্রহণ করেছে।
সবচেয়ে কম দুর্নীতি কোন ৫ দেশেসিপিআই অনুযায়ী, ১০০–এর মধ্যে ৯০ স্কোর পেয়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ডেনমার্ক। অর্থাৎ ১৯০টি দেশের মধ্যে ডেনমার্কে সবচেয়ে দুর্নীতি কম হয়। তারপর সবচেয়ে কম দুর্নীতি থাকা দেশগুলোর মধ্যে ৮৮ স্কোর নিয়ে ফিনল্যান্ড দ্বিতীয়, ৮৪ স্কোর নিয়ে সিঙ্গাপুর তৃতীয়, ৮৩ স্কোর নিয়ে নিউজিল্যান্ড চতুর্থ এবং ৮১ স্কোর নিয়ে যৌথভাবে লুক্সেমবার্গ, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয় ভুটানে। ১০০–এর মধ্যে ৭২ স্কোর নিয়ে তাদের অবস্থান ১৮তম। দেশটিতে ২০২৩ সালের তুলনায়ও দুর্নীতি কমেছে। ভুটানের ধারেকাছে নেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলো। ভুটান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই গত বছর দুর্নীতি বেড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে আফগানিস্তানের পরই বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি।
সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি কোন কোন দেশে২০২৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির মাত্রা বেশি ছিল দক্ষিণ সুদানে। দেশটির স্কোর ১০০–এর মধ্যে মাত্র ৮। তারপর সর্বোচ্চ দুর্নীতি মাত্রা বেশি সোমালিয়া, ভেনেজুয়েলা, সিরিয়ায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম দ র ন ত র অবস থ ন ২০২৪ স ল ২০২৩ স ল র সবচ য় ট আইব
এছাড়াও পড়ুন:
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণের অভিযোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন: গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মনি, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল্লা আল মামুন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন, নির্বাহী প্রকৌশলী ফারহানা আহমেদ, সহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি শিরাজী তারিকুল ইসলাম।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানায়, কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশের মাধ্যমে এ সকল কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মনিরুজ্জামান মনি টরেন্টো ইউনিভার্সিটিতে ডক্টোরাল প্রোগ্রামে অংশ নিতে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি কাটানোর পর পরবর্তী সময়ে অনুমতি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী তাকে ২১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বরখাস্ত করা হয়।
আবদুল্লা আল মামুন পিএইচ.ডি করতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক তাকে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে অননুমোদিতভাবে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
ফারহানা আহমেদ ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মফিজুল ইসলাম ২০২৩ এর ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি কাটালেও পরে ছুটি না নিয়ে অফিসে অনুপস্থিত। তাকে ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
শিরাজী তারিকুল ইসলামও ২০২২ সালের ১২ মে থেকে ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২১ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//