লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাতে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকসহ অন্যদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কালীগঞ্জের দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা গ্রামে অবস্থিত মেসার্স এমজেএ ব্রিকসে এ ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই ফিরে আসতে হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত–সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, মেসার্স এমজেএ ব্রিকস-২ এর মালিক মো.

জাহাঙ্গীর আলমকে গত ২৬ জানুয়ারি এবং ৬ ফেব্রুয়ারি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। আদালত পরিচালনাকালে ইটভাটার বৈধ কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। আদালত পরিচালনাকালে ভাটা কর্তৃপক্ষ অশালীন আচরণ প্রদর্শন করে। বিপুলসংখ্যক লোক সমাগম করে ইটভাটার প্রবেশপথ এক্সকাভেটর এবং ব্যক্তিগত ট্রাক দিয়ে অবরুদ্ধ করে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বিএনপি নেতা ও ইটভাটার মালিক জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।

ইউএনও সিফাত আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার এস এম শাফায়াত আখতার নুর, রাকিবুল ইসলাম এবং লালমনিরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. গোলাম আসিফ রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছিলেন। উদ্ভূত নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম সমাপ্ত না করেই ফিরে আসতে হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ থাকার পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের সবাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে কালীগঞ্জ ইউএনও কার্যালয়ে ফিরে আসেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবর দ ধ ইটভ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও