বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা কাল বৃহস্পতিবার, ‘ক’ গ্রুপে ৪০০, ‘খ’–এ ৮০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা
Published: 12th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণিতে মূল ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ।ঠিত হবে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইটে এক বার্তায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে। প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার পূর্বে বিভাগীয় অপশন অনলাইনে প্রদান করতে হবে।
এর আগে গত ৩ ফে্রুয়ারি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির প্রাক্-নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রাক্-নির্বাচনী পরীক্ষায় তিন শিফটে ৭ হাজার ৫৫২ জন পরীক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম শিফটে ২ হাজার ৫২০ জন, দ্বিতীয় শিফটে ২ হাজার ৫১২ জন ও তৃতীয় শিফটে ২ হাজার ৫২০ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রশ্নের ধরন, নম্বর বিভাজন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তিন শিফটে প্রাক্-নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার্থী ছিলেন ২৪ হাজার ২১১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৭ হাজার ৩৩৯ জন ও ছাত্রী ৬ হাজার ৮৭২ জন। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি মূল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস কৌশল, পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদসমূহের অধীন ১৩টি বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যান্য এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থীদের জন্য প্রকৌশল বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল–পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট ৩টি ও স্থাপত্য বিভাগে ১টি সংরক্ষিত আসনসহ মোট আসন ১ হাজার ৩০৯টি।
আরও পড়ুনবেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে আবেদন শুরু, মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ জেনে নিন বিস্তারিত০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মূল ভর্তি পরীক্ষা—১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, (মডিউল ‘A’: গ্রুপ ‘ক’ এবং ‘খ’ উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা) এবং (মডিউল B: ‘খ’ গ্রুপ মুক্তহস্ত অঙ্কন (Freehand Drawing) এবং দৃষ্টিগত ও স্থানিক ধীশক্তি (Visual Spatial Intelligence) বেলা ২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট।)
আরও পড়ুননার্সিংয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি, আবেদনের শর্তসহ জেনে নিন বিস্তারিত১ ঘণ্টা আগেপরীক্ষার নম্বর—গ্রুপ ‘ক’: প্রকৌশল বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের (উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন) মূল ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচিতে হবে।
গ্রুপ ‘খ’: প্রকৌশল বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের (উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন) মূল ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচিতে হবে। এই গ্রুপের মুক্তহস্ত অঙ্কন এবং দৃষ্টিগত ও স্থানিক ধীশক্তির পরীক্ষা উন্মুক্ত।
মূল ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ গ্রুপের জন্য ৪০০ নম্বরের এবং ‘খ’ গ্রুপের জন্য মোট ৮০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
*চূড়ান্ত ভর্তির জন্য নির্বাচিত ও অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ ৮ মার্চ।
আরও পড়ুনশিক্ষা বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের শিক্ষক নিয়োগ দিতে ‘প্রি সার্ভিস একাডেমিক প্রোগ্রাম’ চালুর সুপারিশ২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।
যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে
২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।
শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’
গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’