ঈদ নাটকে দম্পতি হয়ে ফিরছেন আফজাল-মৌ
Published: 12th, February 2025 GMT
চার বছর আগে ‘দেয়ালের অন্তরালে’ নাটকে অভিনয় করেছেন আফজাল হোসেন ও সাদিয়া ইসলাম মৌ। ওই নাটকে শিক্ষক ছাত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। বেশ বিরতির পর আবারও ‘কোনো একদিন’ নাটকে এই জুটি হাজির হবেন দম্পতির চরিত্রে। ফারিয়া হোসেনের লেখা ঈদের জন্য নাটকটি নির্মাণ করেছেন চয়নিকা চৌধুরী
পরিচালক জানান, নাটকের গল্পটি হৃদয় ছোঁয়া। এতে আফজাল হোসেনের চরিত্রটি ক্যানসারে আক্রান্ত। তার বোনম্যারো স্থানান্তর করা প্রয়োজন। যদিও অনেকের সঙ্গে মিলছিল না বোনম্যারো, একসময় তার অফিসে হাজির হয় এক যুবক। এরপর ঘটতে থাকে নানা রোমাঞ্চকর ঘটনা, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে। এতে আরও অভিনয় করেছেন সৌম্য জ্যোতি, তন্নী মাহমিদ তৃণা, আজম খান প্রমুখ। এর শুটিং শেষ হয়েছে গত সোমবার।
নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘আফজাল হোসেন এবং মৌ আমাদের ইন্ডাস্ট্রির উজ্জ্বল দুই নক্ষত্র। তাদের সাথে কাজ না করলে বুঝতে পারতাম না একজন আফজাল হোসেন কত বড় মাপের মানবিক মানুষ। মৌয়ের পেশাদারীত্ব আমাকে মুগ্ধ করেছে। অনেক যত্ন নিয়ে ছবিটি তৈরি করেছি। আশা করছি ঈদের বিনোদনের অনেক আয়োজনের ভিড়ে আমাদের নাটকটি সবার প্রশংসা কুড়াবে।
আফজাল-মৌ জুটিও নাটকটি নিয়ে আশাবাদী। তারা দর্শককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, প্রচারের পর এটি উপভোগের জন্য। নাটকটি রঙ্গন মিউজিকের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে। আসছে ঈদে এই প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাবে নাটকটি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন আফজ ল হ স ন ন টকট
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে আমনের ক্ষতির শঙ্কা, ধান কাটার পরামর্শ কৃষি বিভাগের
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সিলনা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস। এ বছর ৫৪ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছিলেন আমন ধান। পেকে যাওয়া ধান কেটে ঘরে তোলার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। পরিকল্পনা ছিল, পরিবারের যোগান মিটিয়ে, কিছু ধান বিক্রি করে পুরো বছর চালাবেন ১০ জনের সংসার। তবে, তার সেই স্বপ্ন নষ্ট করে দিল দমকা হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টি। ধান হেলে পড়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তা এখন নষ্ট হতে বসেছে।
এই কৃষক বলেন, “সাংসারে স্ত্রী, ছেলে, নাতীসহ ১০ জন আছে। এ বছর ৫৪ শতাংশ জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। জমির ধানও পেকেছিল। ভেবেছি, কয়েকদিন পর ধান কেটে ঘরে তুলব। এই ধান আর ঘরে তুলতে পারলাম না। ঝড়ো হওয়া আর বৃষ্টিতে হেলে পড়ে পানিতে তলিয়ে ধান এখন নষ্ট হতে বসেছে। সারা বছর কীভাবে চলব তা চিন্তাই করতে পারছি না।” শুধু সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসই নয়, এমন অবস্থা কয়েকটি গ্রামের শতাধিক কৃষকের।
আরো পড়ুন:
খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে রেকর্ড বৃষ্টি, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা
দিনাজপুরে টানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, জনজীবন বিপর্যস্ত
কৃষি বিভাগ বলেছে, ধান দ্রুত কেটে নিলে ক্ষতি কমানো সম্ভব হবে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ১২ হাজার ৩০৮ হেক্টর জমিতে আমান ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের ২ হাজার ২৪৫ হেক্টর, উফশী জাতের ৮ হাজার ২০৩ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষকরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় জেলা জুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। তীব্র বাতাস বয়ে যাওয়ায় হেলে পড়ে পাকা আমন ধান। জমিতে জমে থাকা পানিতে কেটে রাখা ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা গেছে। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট থাকায় হেলে পড়া ধান কাটতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। দ্রুত পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারলে তা মাঠেই নষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
কৃষক মহানন্দ দে বলেন, “বৃষ্টি আগে ধান কাটা শেষ করতে পারলে বিঘা প্রতি ৪০ মণ পেতাম। ধান হেলে পড়ায় ও তলিয়ে যাওয়ায় ২০ মণ পাব কিনা সন্দেহ রয়েছে। ধান কাটতে আগে ৭-৮ জন শ্রমিক লাগলেও এখন লাগবে অন্তত ১৫ জন। ফলে আমরা ধান হারানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”
জমি থেকে ধান কাটায় ব্যস্ত চাষিরা
সিঙ্গারকুল গ্রামের কৃষক বিশ্বম চন্দ্র সরকার বলেন, “পাকা ধান বৃষ্টির কারণে নষ্ট হতে বসেছে। এ ধান না যাবে খাওয়া, না যাবে বিক্রি করা। এমনকি খড় পচে যাচ্ছে যা গরুকেও খাওয়ানো যাবে না। দেনা করে ফসল ফলিয়েছি। এখন ধার কীভাবে মেটাব, আর সারা বছর কীভাবে চলব সেই চিন্তায় দিন কাটছে।”
কৃষক মফিজুর ইসলাম বলেন, “এমন একটা দুর্যোগ গেলেও কৃষি কর্মকর্তারা আমাদের খোঁজ নেননি। শুধু আজ নয়, কোনো সময়ই আমাদের খোঁজ রাখেন না তারা। আমরা কোনো পরামর্শও পাই না তাদের কাছ থেকে। এখন যদি সরকার আমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দেয়, তাহলে আমাদের মরণ ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।”
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, “গত শনিবারের বৃষ্টিতে জেলায় ধানসহ কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে। ক্ষতি কমাতে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনা দিতে ঊর্ধ্বতণ কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
ঢাকা/বাদল/মাসুদ