জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি সংক্রান্ত ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কিছু প্রশ্নপত্রে ত্রুটি দেখা গেছে। একই সেটের বহুনির্বাচনী অভীক্ষায় (এমসিকিউ) নিয়ম অনুযায়ী ৮০টি প্রশ্ন থাকার কথা থাকলেও ছিল ৭৮টি। আবার কিছু প্রশ্নপত্রে একই প্রশ্নের অপশন দু’বার করে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, খুবই অল্পসংখ্যক প্রশ্নপত্রে এমন হয়েছে। এগুলো শনাক্তের পর তাৎক্ষণিকভাবে তা ঠিক করা দেওয়া হয়েছে। 

আজ বুধবার ‘এ’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্রে এমন ত্রুটির কথা জানান পরীক্ষার্থীরা। তারা জানান, তৃতীয় শিফটের পরীক্ষায় গ্রিন কালার সেট ও ইয়েলো কালার সেটের প্রশ্নে এমন ত্রুটি হয়েছে। গ্রিন সেটের ৮০টি প্রশ্নের জায়গায় ছাপানো হয়েছে ৭৮টি। দুটি প্রশ্নের অপশন থাকলেও কোনো প্রশ্ন সেখানে ছিল না। ইয়েলো সেটের একই প্রশ্নে দু’বার করে অপশন পেয়েছেন বলে জানান তারা। চতুর্থ শিফটেও একই ত্রুটি এবং একটি প্রশ্নের অপশনে কোনো উত্তরই ছিল না বলে জানিয়েছেন তারা। 

রংপুর থেকে আগত পরীক্ষার্থী সিয়াম হাসান সমকালকে বলেন, ‘তৃতীয় শিফটের প্রশ্নপত্রে ৮০টি প্রশ্নের পরিবর্তে আমরা ৭৮টি পেয়েছিলাম। এতে আমরা ঘাবড়ে যাই। পরে হলের দায়িত্বরত শিক্ষকদের জানানোর পর হোয়াইট বোর্ডে বাকি দুটি প্রশ্ন লিখে দেওয়া হয়।’ 

সাগর বিশ্বাস নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমি কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সেখানে প্রশ্নপত্রে একটি প্রশ্নে একই অপশন দু’বার করে উল্লেখ করা ছিল। ফলে আমি সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গেছি।’

কলা ও মানবিক অনুষদে পরীক্ষায় দায়িত্বরত কয়েকজন শিক্ষক বলেন, তৃতীয় শিফটের পরীক্ষায় গ্রিন সেট প্রশ্নপত্রে দুটি প্রশ্ন ছিল না। পরে আমরা পাশের রুম থেকে ওই দুটি প্রশ্ন নিয়ে এসে বোর্ডে লিখে দেই। এর মধ্যে পরীক্ষার্থীরা ঘাবড়ে গিয়েছিল। প্রশ্নপত্র বেশ ত্রুটিপূর্ণ ছিল, যা মোটেও কাম্য নয়। কয়েকটি প্রশ্নে অপশন একাধিকবার উল্লেখ ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনাও আসেনি।’

এ বিষয়ে গাণিতিক ও পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহবুব কবির বলেন, ‘এ’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে গ্রিন কালার সেটে কয়েকটি রুমে দুটি প্রশ্ন ছিল না। এটা আসলে ছাপার সমস্যা ছিল। পরে বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের সহকর্মীরা যতদ্রুত সম্ভব বিষয়টি সমাধান করেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ পর ক ষ য়

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হতে হবে: নাহিদ

জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই সংবিধানের প্রস্তাবনা ও তফশিলে উল্লেখ করে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা নির্বাচিত সংসদের হাতে এই সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দেব না, বরং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী সংসদ গঠিত হবে, গণপরিষদ গঠিত হবে। এবং অর্ন্তর্বতী সরকারের আমলেই এই সনদ কার্যকর করতে হবে।

শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘জুলাই পদযাত্রায় আমরা গণহত্যার বিচার, সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়েছিলাম। পাশাপাশি আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের কথা বলেছিলাম। পাশাপাশি আমাদের দাবি ছিল, ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদের বিষয়টিও যেন সুরাহা হয়।’’

আরো পড়ুন:

জুলকারনাইনের পাঁচ প্রশ্ন ও রিয়াদকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ

মানুষ পরিবর্তন চায়, এনসিপিকে চায়, নরসিংদীতে নাহিদ

আগামী ৫ আগস্ট সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘‘সরকারের পক্ষ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, জুলাই ঘোষণাপত্রটি সরকার আগামী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষ এবং রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ঘোষণা করতে যাচ্ছে। যদিও ঐক্যমত্য কমিশন এখনো জানায়নি ‘নোট অব ডিসেন্টে’র বিষয়গুলোর সমাধান কী হবে।’’

গত বছর ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকার পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল। আগামীকাল রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে জুলাই পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। এই সমাবেশ থেকে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ করা হবে। সেখানে এনসিপির পক্ষ থেকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। 

উল্লেখ্য আগামীকাল বিকেল ৪টায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে আজ শনিবার দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে জানানো হয়। পোস্টে এনসিপির নেতাকর্মীসহ সারাদেশের মানুষকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।  

সমাবেশের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘‘আগামীকাল এইচএসসি পরীক্ষা আছে। এছাড়া ছাত্রদলের সমাবেশ রয়েছে। একই এলাকায় দুটি বড় কর্মসূচি থাকায় ভোগান্তি হতে পারে।’’

এ জন্য তিনি ঢাকাবাসী এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘৩ আগস্ট একটা ঐতিহাসিক দিন। এ কারণে এই দিনে এই সমাবেশ করছি আমরা। এই দিনের বিশেষ গুরুত্বের কারণে ছুটির দিনের বাইরে এটা করতে হচ্ছে। তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন মানুষের ভোগান্তি কম হয়।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, এই এক বছরে তার পূর্ণতা আমরা লক্ষ্য করিনি। জুলাই সনদের মধ্য দিয়ে সেই আকাঙ্ক্ষাটা আংশিক পূরণ হবে। দেশের একটা গণতান্ত্রিক সংস্কার হচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংস্কার, কর্মসংস্থান এবং মানুষের জীবনমানের পরিবর্তনের বিষয়গুলো নিয়ে এত অল্প সময়ের মধ্যে কাজ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এই সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে এনসিপির জন্ম।’’
 

ঢাকা/রায়হান

সম্পর্কিত নিবন্ধ