বাংলাদেশে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে আদানি
Published: 15th, February 2025 GMT
বাংলাদেশকে পুরো ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার। আগামী তিন মাস পর পুরো সরবরাহ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদ্যুতের দামে যে ছাড় ও কর–সুবিধা চাওয়া হয়েছিল, তা দিতে রাজি হয়নি আদানি। খবর রয়টার্সের।
বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতির কারণে বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধে বিলম্ব হলে গত বছরের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে অর্ধেক করে দেয় গৌতম আদানির কোম্পানি। ১ নভেম্বর ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় তারা। শীত মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে, সে কারণে বাংলাদেশও বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেয়; সেই সঙ্গে মূল্য পরিশোধের বিষয়টি তো ছিলই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গ্রীষ্ম মৌসুমের আগে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) অনুরোধে আগামী সপ্তাহ থেকে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হয়েছে আদানি পাওয়ার। ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানি পাওয়ারের এই কেন্দ্র থেকে কেবল বাংলাদেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
সূত্র দুটি আরও জানিয়েছে, আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে রাজি হলেও ঢাকার অন্যান্য অনুরোধ মানতে রাজি হয়নি। গত মঙ্গলবার আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বিপিডিবি।
আদানি পাওয়ার সম্পর্কে একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, আদানি পাওয়ার ছাড় দিতে রাজি নয়, এমনকি ১০ লাখ ডলারও নয়। বাংলাদেশ কেনো ছাড় পায়নি।
এ বিষয়ে বিপিডিবির চেয়ারপারসনরেজাউল করিমের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে রয়টার্সকে তিনি বলেছিলেন, আদানির সঙ্গে এখন আমাদের বড় কোনো সমস্যা নেই এবং তারা পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে যাচ্ছে। আদানি পাওয়ারের পাওনা পরিশোধের পরিমাণ মাসে সাড়ে ৮ কোটি ডলার থেকে বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ক্রেতার চাহিদার সাপেক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়; ক্রেতাদের চাহিদা সময় সময় পাল্টায়।
গত ডিসেম্বর মাসে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র বলেছিলেন, বিপিডিবির কাছে তাদের পাওনা প্রায় ৯০ কোটি ডলার; যদিও রেজাউল করিম তখন বলেছিলেন, এই অঙ্ক ৬৫ কোটি ডলার। মতভিন্নতা মূল কারণ হলো বিদ্যুতের শুল্ক হিসাবের পদ্ধতি।
এর আগে বিপিডিবি আদানি পাওয়ারের কাছে কয়েক লাখ ডলারের কর–সুবিধা এবং গত বছরের মে মাস পর্যন্ত যে ছাড় ছিল, তা পুনর্বহাল চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ সরবর হ রয়ট র স
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।