বাংলাদেশকে পুরো ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার। আগামী মে মাসের পর বাংলাদেশকে চুক্তির পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে আদানি। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদ্যুতের দামে যে ছাড় ও কর–সুবিধা চাওয়া হয়েছিল, তা দিতে রাজি হয়নি আদানি। খবর রয়টার্সের

বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতির কারণে বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধে বিলম্ব হলে গত বছরের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে অর্ধেক করে দেয় গৌতম আদানির কোম্পানি। ১ নভেম্বর ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় তারা। শীত মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে, সে কারণে বাংলাদেশও বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেয়; সেই সঙ্গে মূল্য পরিশোধের বিষয়টি তো ছিলই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গ্রীষ্ম মৌসুমের আগে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) অনুরোধে আগামী সপ্তাহ থেকে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হয়েছে আদানি পাওয়ার। ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানি পাওয়ারের এই কেন্দ্র থেকে কেবল বাংলাদেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

সূত্র দুটি আরও জানিয়েছে, আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে রাজি হলেও ঢাকার অন্যান্য অনুরোধ মানতে রাজি হয়নি। গত মঙ্গলবার আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বিপিডিবি।

আদানি পাওয়ার সম্পর্কে একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, আদানি পাওয়ার ছাড় দিতে রাজি নয়, এমনকি ১০ লাখ ডলারও নয়। বাংলাদেশ কেনো ছাড় পায়নি।

এ বিষয়ে বিপিডিবির চেয়ারপারসনরেজাউল করিমের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে রয়টার্সকে তিনি বলেছিলেন, আদানির সঙ্গে এখন আমাদের বড় কোনো সমস্যা নেই এবং তারা পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে যাচ্ছে। আদানি পাওয়ারের পাওনা পরিশোধের পরিমাণ মাসে সাড়ে ৮ কোটি ডলার থেকে বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।

সম্প্রতি আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ক্রেতার চাহিদার সাপেক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়; ক্রেতাদের চাহিদা সময় সময় পাল্টায়।

গত ডিসেম্বর মাসে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র বলেছিলেন, বিপিডিবির কাছে তাদের পাওনা প্রায় ৯০ কোটি ডলার; যদিও রেজাউল করিম তখন বলেছিলেন, এই অঙ্ক ৬৫ কোটি ডলার। মতভিন্নতা মূল কারণ হলো বিদ্যুতের শুল্ক হিসাবের পদ্ধতি।

এর আগে বিপিডিবি আদানি পাওয়ারের কাছে কয়েক লাখ ডলারের কর–সুবিধা এবং গত বছরের মে মাস পর্যন্ত যে ছাড় ছিল, তা পুনর্বহাল চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ সরবর হ রয়ট র স

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প