রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক প্রয়াত অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে কোনো লাভ নেই।

আগামীকাল রোববার নাভালনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। এর আগে গত শুক্রবার জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে নাভালনায়া বলেন, ‘পুতিনের সঙ্গে যদি আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে মনে রাখবেন তিনি মিথ্যা বলবেন। তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করবেন। তিনি শেষ মুহূর্তে তাঁর নিয়ম বদলে দেবেন এবং তাঁর নিজের খেলা খেলতে বাধ্য করবেন।’

নাভালনায়া আরও বলেন, ‘পুতিনের সঙ্গে যেকোনো চুক্তির সম্ভাব্য ফলাফল দুটি। তিনি যদি ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে তিনি চুক্তি ভঙ্গ করার উপায় খুঁজে পাবেন। যদি তিনি ক্ষমতা হারান, তাহলে চুক্তিটি অর্থহীন হয়ে পড়বে।’

গতকাল শুক্রবার নির্বাসিত বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেত্রী সভেতলানা টিখানোভস্কায়ার সঙ্গে সম্মেলনে একটি প্যানেলে বক্তৃতা দেন নাভালনায়া।

নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চান জেলেনস্কি

মিউনিখ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চান। এ সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ শেষ করতে যেকোনো সূত্র বের করার আগে তিনি হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আরও আলোচনা চান।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস উইথ ক্রিস্টেন ওয়েলকার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেন জেলেনস্কি। তিনি এতে বলেন, রাশিয়ার আক্রমণের মুখে মার্কিন সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।

জেলেনস্কি এমন এক সময় এ কথা বললেন, যখন (এ সপ্তাহের শুরুতে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেলিফোনে তাঁর ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। ট্রাম্প অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চান। এ লক্ষ্যে শুরু করতে চান কূটনৈতিক আলোচনা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ