দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা
Published: 16th, February 2025 GMT
ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের (আইওসি) ৮ম পর্বে যোগ দিতে ওমানের মাস্কাটে গিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আলোচনায় স্থান পেয়েছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উদ্বেগগুলো। রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ১৬–১৭ ফেব্রুয়ারি আইওসির ৮ম পর্বে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সম্মেলনের যৌথ আয়োজক ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশন, ভারত ও ওমান সরকার। সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। বৈঠকে দুই পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি অভিন্ন উদ্বেগ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে আলোচনা করেছে।
জাতিসংঘের গত সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের কথা মাস্কাটে স্মরণ করে দুই দেশ। সেই বৈঠকের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে গত ৯ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) এবং ১০–১১ ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে ভারতের জ্বালানি সপ্তাহে বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টার অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করেছে।
এছাড়া ১৮–২০ ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকটিও আলোচনায় স্থান পায়। বৈঠকে সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তৌহিদ হোসেন ও এস জয়শঙ্কর।
মাস্কাটে বৈঠকে দুই পক্ষই প্রতিবেশী হিসেবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেন। আর এ চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানে একত্রে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নে প্রক্রিয়া শুরু করতে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং এ বিষয়টিতে বিবেচনার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেন।
সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভিয়েতনামের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তাজনানিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বৈঠক করেন। আজ সোমবার ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠকের কথা রয়েছে।
এদিকে এক্স হ্যান্ডেলে তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদির পাশাপাশি বিমসটেক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আইওসি ৮ম পর্বের ‘সমুদ্র পথে সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালিকরণ’ শীর্ষক প্লানারি সেশনে অংশ নেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি সামুদ্র পথে সরবরাহ দক্ষতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং স্থায়িত্বকে বিপন্ন করে এমন বহুমুখী চ্যালেঞ্জগুলো ব্যাখ্যা করেন। সেই সঙ্গে বাধাগুলি কাটিয়ে ও স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে সমুদ্র পথে সরবরাহ ব্যবস্থার শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রিক পদ্ধতি এবং সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া নাবিকদের জন্য ভিসা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন পরর ষ ট র উপদ ষ ট র পরর ষ ট রমন ত র র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং