Samakal:
2025-06-16@08:40:32 GMT

দেড় মাস ধরে মায়ের সন্ধানে ছেলে

Published: 16th, February 2025 GMT

দেড় মাস ধরে মায়ের সন্ধানে ছেলে

দেড় মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাসিন্দা রেবেকা বেগম। তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন ছেলে শরীফুল ইসলাম (১৮)। মায়ের নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করলেও পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি। 
রেবেকা বেগম রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের জালদিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী। গত ১ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। 
শরীফুল ইসলামের ভাষ্য, তাঁর মায়ের কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের কাছে যেতেন। কখনও তারা গিয়ে নিয়ে আসতেন, আবার কখনও একাই ফিরে আসতেন। গত ১ জানুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিলেন আগের মতোই মা ফিরে আসবেন। কয়েকদিন যাওয়ার পর ফিরে না আসায় নিকট আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেন। সেখানে না পেয়ে পরিচিত সব জায়গায় খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু কোথাও তাঁর মায়ের সন্ধান পাননি। 
মায়ের খোঁজ পেতে রাজবাড়ী জেলা শহর ছাড়াও ফরিদপুর, মাগুরাসহ আশপাশের জেলায় পোস্টারিং করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। কিন্তু কোনোভাবেই মায়ের সন্ধান পাচ্ছেন না। গত ২৫ জানুয়ারি রাজবাড়ী সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কিন্তু পুলিশেরও তেমন তৎপরতা নেই। মাকে খুঁজতে খুঁজতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। 
যে কোনো মূল্যে মাকে ফেরত চান জানিয়ে শরীফুল বলেন, ‘আমি ফরিদপুর পলিটেকনিক কলেজে পড়ছি। সামনে আমার দুটি পরীক্ষা। পরীক্ষায় মনোযোগ দিতে পারছি না। মাকে খুঁজব নাকি পড়াশোনা করব। শুধুই মনে হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই গ্রুপে মেসেজটা দিলে ফল পাওয়া যাবে। এই চিন্তা করতে করতে দিন কাটে আমার। একটি পরীক্ষা খারাপ হলে একটি বছর শেষ।’ 
সাধারণ ডায়েরির বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আব্দুস সালাম জানান, ওই জিডিটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি ইজতেমায় ছিলেন। কয়েক দিন আগে রাজবাড়ী ফিরেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেছেন। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভালোবাসার আসল রূপটাই যেন ছিলেন আব্বা’

এবারের বাবা দিবস আমার কাছে একটু অন্যরকম। চারপাশ যেন কিছুটা বেশি নিস্তব্ধ, হৃদয়ের ভেতর যেন একটু বেশি শূন্যতা। কারণ এবার প্রথমবারের মতো আমার আব্বাকে ছাড়াই কাটছে দিনটি। আব্বা চলে গেছেন গত জানুয়ারিতে। ফলে বাবা দিবস এখন আর কেবল উদযাপনের দিন নয়– এটি হয়ে উঠেছে স্মরণ, অনুধাবন ও আমার জীবনের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উপলক্ষ। আব্বা না থেকেও আছেন, তবে এক ভিন্ন অনুভবে– আমার নীরব নিঃশব্দ অভিভাবক হয়ে।    

আমাদের সমাজে কিংবা বলা যায় পারিবারিক সংস্কৃতির বাবারা সবসময় প্রকাশের ভাষায় ভালোবাসা বোঝান না। তাদের স্নেহ, দায়িত্ববোধ ও নিবেদন অনেক সময়েই নীরব থাকে, তবে গভীরভাবে অনুভব করা যায়। আমার আব্বাও ছিলেন তেমনই একজন। আব্বা ছিলেন আমার দিকনির্দেশক, আমার রক্ষাকবচ, আমার জীবনপথের চুপচাপ ভরসা। 

আব্বার অ্যাজমা ছিল, তা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্বাস্থ্যসচেতন। নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নিতেন, আমাদের প্রতিও ছিল তাঁর সজাগ দৃষ্টি। আমি কিংবা আমার মেয়ে সামান্য অসুস্থ হলেই তিনি অস্থির হয়ে যেতেন। তাঁর যখন ৭৯ বছর বয়স, তখনও আমি ডাক্তারের কাছে একা যেতে গেলে বলতেন, ‘তুমি একা যাবে কেন? আমি যাচ্ছি।’ এই কথা বলার মানুষটাকে প্রতি পদে পদে আমার মনে পড়ে, যেন দূর থেকে দেখছেন সবই। আর আমিও তাঁর কনুই-আঙুল ধরে হেঁটে যাচ্ছি জীবনের পথে।    

আব্বা ছিলেন একজন পুরোদস্তুর ধার্মিক মানুষ। শৈশব থেকে নামাজের গুরুত্ব তিনি আমার মধ্যে গভীরভাবে বপন করার চেষ্টা করে গেছেন। কখনও নরম সুরে, আবার কখনও খুব জোর গলায়। তখন মনে হতো তিনি চাপ দিচ্ছেন; কিন্তু এখন তাঁর অনুপস্থিতির নিস্তব্ধতায় আমি সেই কণ্ঠস্বরের জন্য আকুল হই।

অফিস থেকে ফিরতে দেরি করলে কিংবা আত্মীয়ের বা বন্ধুর বাসায় গেলে বাবার ফোন আসত, ‘কোথায়? কখন ফিরবি?’ সেসব ফোন একসময় মনে হতো আব্বার বাড়াবাড়ি। এখন মনে হয়, একটাবার হলেও যদি ফোনে তাঁর নামটা দেখতাম! ছোট ছোট এসব প্রশ্ন– এই উদ্বেগই তো ছিল নিঃশব্দ ভালোবাসা। এগুলোই ছিল বাবার নিজের মতো করে যত্ন নেওয়ার ভাষা। সেই ভাষাটাই আজ আর শোনা যায় না। আব্বা নেই, এখন জীবনযাপনে এক অদ্ভুত শূন্যতা ঘিরে থাকে।

আব্বা ছিলেন একজন ব্যাংকার। হয়তো চেয়েছিলেন আমি তাঁর পেশার ধারাবাহিকতা বজায় রাখি। কিন্তু কোনোদিন চাপ দেননি। বরং নিজের ইচ্ছেমতো পথ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন; ছায়ার মতো পাশে ছিলেন। আব্বাই আমাকে নিজের ওপর আস্থা রাখতে শিখিয়েছেন। বিয়ে করেছি, বাবা হয়েছি, নিজস্ব ক্যারিয়ার গড়েছি– তবুও বাবার সেই গাইডেন্স কখনও ফুরায়নি। আব্বা কখনও অর্থ বা অন্য কোনো সহায়তার কথা বলেননি; বরং সবসময় নিজে থেকেই পাশে থেকেছেন। মনে পড়ে, একবার মেয়ের অসুস্থতার সময় আমি অর্থকষ্টে ছিলাম, কিছু বলিনি তাঁকে। কিন্তু তিনি ঠিকই বুঝে গিয়েছিলেন, পাশে থেকেছেন।

এখন অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মনে হয়, ‘বাবা হলে কী করতেন?’ তাঁর শিক্ষা, অভ্যাস, স্নেহ– সবকিছু এখন আমার আচরণে, আমার সিদ্ধান্তে, আমার ভালোবাসায় প্রতিফলিত হয়। তাঁকে ছুঁতে না পারলেও আমি প্রতিদিন তাঁর উপস্থিতি অনুভব করি– স্মৃতিতে, নৈঃশব্দ্যে, নানা রকম ছোট ছোট মুহূর্তে।

এই বাবা দিবসে আব্বার কোনো ফোন আসবে না, থাকবে না কোনো উপহার বা আলিঙ্গনের মুহূর্ত; যা আছে সেটি হলো আব্বার প্রতি একরাশ কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা আর অপার ভালোবাসা। যিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সন্তানদের শুধু দিয়েছেন, বিনিময়ে কিছু চাননি কখনোই। তাঁর জীবনদর্শন আর মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি– এগুলোই নিজের জীবনে ধারণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি, হয়তো পুরোপুরি পারছি না; কিন্তু আমার মনে হয় এ চেষ্টাটাই আমার জীবনে শৃঙ্খলা এনেছে।

বাবাকে হারানোর শোক যেমন গভীর, তেমনি গভীর তাঁর রেখে যাওয়া ভালোবাসা। নিজের অনুভবকে চাপা না দিয়ে, বরং বাবাকে নিজের ভেতরে জায়গা দিন। বাবার কথা বলুন, তাঁর শেখানো পথে হাঁটুন। কারণ প্রিয় মানুষরা চলে যান বটে, কিন্তু তাঁদের ভালোবাসা থেকে যায় সবসময়।

লেখক: কমিউনিকেশনস প্রফেশনাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে আবারও বিমান বিপর্যয়, পাইলটের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন ২৫০ হজযাত্রী
  • ঈদের ছুটিতে ৯৯৯-এ মারামারির অভিযোগ ছিল ৪ হাজার ১০২টি
  • ‘ভালোবাসার আসল রূপটাই যেন ছিলেন আব্বা’
  • বর্ষার শুরুতেই সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টির বার্তা
  • টানা সাত দিন সারাদেশে বৃষ্টি ঝরবে
  • অর্ধশত বছরের চামড়ার মোকাম রাজারহাট
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সোর্স ইকবালের ডাকাতি