রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ঘটনায় সম্প্রতি গঠিত পাঁচটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী দুই শিক্ষককে চূড়ান্ত শাস্তি দিতে ইনকোয়ারি কমিটি গঠন, সাবেক এক শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বহাল, এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার ও তিন শিক্ষককে পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম থেকে ৫ বছরের জন্য বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো পৃথক তিনটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আনা অভিযোগ তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আগের সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল রাখা হয়েছে। এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩-এর আইনের ৫৫ (৩) ধারা অনুযায়ী চূড়ান্ত শাস্তি দিতে ইনকোয়ারি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

অন্য আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলামের মাস্টার্সের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের মাধ্যমে ছাত্রত্ব বাতিল বিষয়ে গঠিত রিভিউ কমিটির প্রতিবেদন বিবেচনা করে তার ছাত্রত্ব পুনর্বহাল ও তার পরীক্ষার অপ্রকাশিত ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে ৪৬১তম সভায় রফিকুলের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছিল।

জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো.

শামসুল আলম সরকারের প্রসঙ্গে ৪৬১তম সিন্ডিকেট সভার ১৩৭ নম্বর সিদ্ধান্ত বিষয়ে গঠিত রিভিউ কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনীত সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সরকার কূটকৌশলের কারণে বিনা অপরাধে সাজা ভোগ করেছেন তা প্রমাণিত হওয়ায় একই বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল হক, ড. আলী আকবর ও ড. আশরাফুজ্জামান খানকে আগামী ৫ বছর পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তে অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সরকার সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভা তার প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কম ট র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে বিবাহবিচ্ছেদের চার দিনের মাথায় লাউখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

পঞ্চগড়ে স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর সন্তানদের রেখে গোপনে বিয়ে করে ঘর ছেড়েছিলেন এক নারী। দ্বিতীয় বিয়ের প্রায় এক মাস পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় বাড়ির পাশের লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের ধামোর মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম তানজিনা আক্তার (৩৫)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার দ্বিতীয় স্বামী মিনাল হোসেনের বাবা দিলু হোসেনকে (৫৫) হেফাজতে নিয়েছে আটোয়ারী থানার পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, তানজিনা আক্তারের প্রথম স্বামী মজিবর রহমান প্রায় দুই বছর আগে মারা যান। তাঁদের দুটি ছেলে আছে। এর মধ্যে প্রায় এক মাস আগে স্থানীয় যুবক মিনাল হোসেনকে (২৭) গোপনে বিয়ে করে পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। এর পর থেকেই মিনালকে ছেড়ে দিতে তানজিনার ওপর চাপ দিতে থাকে মিনালের পরিবার। গত ৩০ অক্টোবর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকেই মিনালকে এলাকায় দেখা যায়নি।

পুলিশ জানায়, আজ সকালে ধামোর-মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেতে কয়েকজন লাউ তুলতে গিয়ে এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান। এ সময় স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশটি তানজিনার বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে বারঘাটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও আটোয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ