যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে এ সপ্তাহান্তে তীব্র শীতকালীন ঝড়ে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ঝড়ের সঙ্গে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে কয়েকটি এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।

কেন্টাকিতে বন্যার পানিতে অনেক রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। বাড়িঘরেও বন্যা পানি প্রবেশ করেছে। সেখানে ঝড়-বন্যায় অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার।

গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে অ্যান্ডি বেশিয়ার লেখেন, ‘আমরা এইমাত্র পাইক কাউন্টিতে আবহাওয়া–সম্পর্কিত কারণে আরও একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছি। এই একজনকে নিয়ে আমরা মোট নয়জনকে হারিয়েছি।’

জর্জিয়ায় আরও অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন কেন্টাকির গভর্নর।

সপ্তাহান্তের এই ঝড়কে অ্যান্ডি বেশিয়ার অন্তত এক দশকের মধ্যে কেন্টাকিতে আঘাত হানা সবচেয়ে গুরুতর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে একটি বলেও বর্ণনা করেছেন।

গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেছেন, সেখানে এখন উদ্ধার কার্যক্রম চলেছে।

বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ঝড় এবং ঝড়পরবর্তী সময়ের নানা ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোয় ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ, বন্যার পানিতে ডুবে থাকা যানবাহন ও আংশিক ডুবে থাকা বাড়িঘর দেখা যাচ্ছে। অনেক সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে আছে। বিশেষ করে কেন্টাকি, টেনিসি ও ভার্জিনিয়ায়।

গত শনিবার যখন ঝড়ের তাণ্ডব চলছিল, ওই সময় কেন্টাকিতে বন্যার পানির উচ্চতা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

দুই বছর আগে কেন্টাকিতে ভয়াবহ বন্যায় ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। বন্যায় অঙ্গরাজ্যটির একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

এবারের ঝড়ও ‘ব্যাপক’ প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে গভর্নর বেশিয়ার বলেছেন, ‘কেন্টাকির বাসিন্দাদের আমাদের সতর্ক করতে হবে। তিন শতাধিক সড়ক বন্ধ হয়ে আছে; স্থানীয় পরিবহননেতারা বলেছেন, অঙ্গরাজ্যজুড়ে ঐতিহাসিক প্রভাব পড়তে চলেছে। পূর্বে ভূমিধস থেকে পশ্চিমে তুষারপাত, পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক। কেন্টাকিবাসী, দয়া করে সামনের দিনগুলোর জন্য প্রস্তুত হন, ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন এবং নিরাপদে থাকুন।’

যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে একটি শিশুও আছে বলে জানিয়েছেন কেন্টাকির গভর্নর। নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও মত তাঁর। তিনি কেন্টাকির বাসিন্দাদের সড়ক থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তীব্র শীতকালীন ঝড়, জরুরি অবস্থা জারি ১৬ জানুয়ারি ২০২২

শীতকালীন ঝড় আঘাত হানতে চলেছে—সতর্কতা হিসেবে গত শুক্রবারই কেন্টাকিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন গভর্নর বেশিয়ার। গতকাল তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেন। ট্রাম্প কেন্টাকিতে ফেডারেল ডিজাস্টার ঘোষণার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তার জন্য কেন্টাকি প্রশাসন ফেডারেল ত্রাণ তহবিল থেকে বরাদ্দ পাবে।

কেন্টাকির আবহাওয়া আরও কয়েক দিন বিরূপ থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

ঝড় ও বন্যার কারণে কেন্টাকিতে বহু মানুষ বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

অঙ্গরাজ্যটির নয়টি কাউন্টিতে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

আরও পড়ুনকেন্টাকিতে অসময়ের টর্নেডো, ১০০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা১২ ডিসেম্বর ২০২১.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন র ম ত য বন য র প ন

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন