জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় ষড়যন্ত্রকারীরা: মিন্টু
Published: 17th, February 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায়। যারা এই ষড়যন্ত্র করে তাদের গণতান্ত্রিকভাবে কড়া জবাব দিতে হবে।
সোমবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী স্কুল মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো ও দ্রুত নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে এই জনসভার আয়োজন করে চাঁদপুর জেলা বিএনপি।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করতে দেওয়া হবে না। সংস্কারের নামে টালবাহানা না করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিন। যেন মানুষ আশ্বস্ত হতে পারে। এর বাইরে কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে পালানোর পথ পাবেন না।
বিএনপি দেশের গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে কাজ করছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি এক দিনে হয় না। আমরাও সংস্কার চাই। তবে সংস্কারের নামে টালবাহানা করে আমাদের দেশকে কোনোভাবেই দীর্ঘদিন অগণতান্ত্রিক দেখতে চাই না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচনকালীন রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। সেই নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দেয়, তাকে নিয়ে সরকার গঠন করুন। আমরা কোনো আপত্তি করব না।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি- বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের দল। তাই জনগণ যদি আমাদের পছন্দ করে, তাহলে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সরকার গঠন করব। তাই সংস্কারের নামে টালবাহানা করে আমাদের দেশকে আর অগণতান্ত্রিক রাখবেন না।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক (কুমিল্লা বিভাগ) সম্পাদক মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র আম দ র গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।
আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।
ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।
এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।