দুই দফা জানাজা শেষে গতকাল সোমবার রাতে প্রথম আলোর কুমিল্লা কার্যালয়ে কর্মরত জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক এম সাদেকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাদ মাগরিব কুমিল্লা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এম সাদেকের প্রথম ও বাদ এশা নগরের অশোকতলা জামে মসজিদের সামনে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত ৯টার দিকে অশোকতলা এলাকার সামাজিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

দুটি জানাজাতেই এম সাদেকের সহকর্মী, এলাকাবাসী, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। সর্বস্তরের মানুষের তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও  ভালোবাসা জানিয়েছেন।

সোমবার দুপুর ১টা ৫৭ মিনিটে কুমিল্লা নগরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে মারা যান এম সাদেক। এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কুমিল্লা শহরতলির গোমতী নদীর পাড়ে চানপুর এলাকায় এম সাদেক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। নগরীর অশোকতলা এলাকার বাসিন্দা এম সাদেক মৃত্যুকালে এক ছেলে, স্ত্রী, পুত্রবধূ, নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী-শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন।

সহকর্মী এম সাদেকের মৃত্যুর খবরে ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে ছুটে আসেন প্রথম আলোর আঞ্চলিক সংবাদবিষয়ক সম্পাদক তুহিন সাইফুলের, হাউস ফটো করা-অর্ডিনেটর জিয়া উল ইসলাম, ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রধান মুরাদ খালেদা সরকার এবং প্রশাসনিক বিভাগের সহ-ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল নাম।

দ্বিতীয় জানাজা পূর্ব বক্তব্যে তুহিন সাইফুলের বলেন, এম সাদেক প্রথম আলোর দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ফটো সাংবাদিক। তিনি সব সময় পেশাদারত্ব বজায় রেখে কাজ করে গেছেন। কাজের ক্ষেত্রে তিনি কখনো আপস করেননি। তার এমন মৃত্যু প্রথম আলো পরিবারের জন্য বেদনার। তিনি মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকবেন তাঁর কাজের মাধ্যমে। এম সাদেক একজন ভালো মানুষ ছিলেন।

এম সাদেকের নিজ এলাকা অশোকতলা জামে মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জানাজার পূর্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা সাজ্জাদুর কবির, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, প্রথম আলোর কুমিল্লা প্রতিনিধি আবদুর রহমান, স্থানীয় সাবেক সিটি কাউন্সিলর আবদুর রহমান, স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাদা সাকিব প্রমুখ।

প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজার পূর্বে বক্তব্যে বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদন হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন বলেন, কুমিল্লা হারিয়েছে একজন ভালো মানুষকে। আমি হারিয়েছি আমার খুব কাছের একজন শুভাকাঙ্ক্ষীকে। তিনি খুবই সাদা মনের একজন মানুষ ছিলেন।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী (আবু) বলেন, তিনি অত্যন্ত সাহসী ফটো সাংবাদিক ছিলেন।

প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বাবার জানাজায় অংশ নিয়ে নিজের কান্না থামাতে পারছিলেন না এম সাদেকের একমাত্র ছেলে কাউসার আলম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাবা আমার অহংকার ছিলো। আমার বাবা আমার গর্ব ছিলো। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। ’

বক্তব্যে সহকর্মীর কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এম সাদেকের সহকর্মীরা। প্রথম আলো কুমিল্লার সাবেক নিজস্ব প্রতিবেদক নাসির উদ্দিন বলেন, কাজের মাধ্যমে সাদেক ধীরে ধীরে নিজেকে সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে গেছেন।

এম সাদেকের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

জানাজার পূর্বে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা (টিপু), কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আমীরুজ্জামান আমীর, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন (কায়সার), সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান, মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি কামারুজ্জামান সোহেল, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, কুমিল্লা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সোয়েব সোহেল, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাসির উদ্দিন, সাপ্তাহিক অভিবাদন সম্পাদক আবুল হাসনাত বাবুল, দৈনিক শিরোনাম সম্পাদক নিতিশ সাহা, দৈনিক আমার শহরের সম্পাদক গাজিউল হক, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক (ফারুক), সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এম স দ ক র ন এম স দ ক র রহম ন ব এনপ র সহকর ম

এছাড়াও পড়ুন:

নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের

নাটোরে ছুরিকাঘাতে খোরশেদ আলম (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সদর উপজেলার তেগাছি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত খোরশেদ ওই এলাকার ইউনুস আলীর ছেলে ও পেশায় রিকশাচালক ছিলেন। অভিযুক্ত সালমান (১৭) একই এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সালমানের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগ আনেন খোরশেদ আলম। এ ঘটনায় সালমান ক্ষিপ্ত হয়ে খোরশেদকে কুপিয়ে জখম করে। স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীর মাদরাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা 

পুলিশ পরিদর্শক মাসুদুর রহমান আত্মগোপনে

নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুর রহমান বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত সালমানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে মামলাসহ পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/আরিফুল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে মারামারির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ৪ নেতা হাসপাতালে
  • ফুলে সাজানো রিকশায় করে প্রধান শিক্ষকের বিদায়
  • অমিতাভের চিরকুট কিংবা ফ্যাশন নিয়ে রাধিকার ১০ প্রশ্নের জবাব, ১০ ছবি
  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • বকশিশের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হত্যা: সহকর্মীর যাবজ্জীবন 
  • শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক ‘আত্মগোপনে’
  • দর্শক ভালো নাটক দেখতে চায়, সেটা বারবারই প্রমাণ হচ্ছে: হিমি