রাধিকার এক হাতে ব্রেস্ট পাম্প, অন্য হাতে মদের গ্লাস
Published: 18th, February 2025 GMT
হাস্যোজ্জ্বল মুখে দাঁড়িয়ে আছেন ‘সেক্রেড গেমস’ তারকা রাধিকা আপ্তে। এক হাত দিয়ে ব্রেস্ট পাম্পিং করছেন, অন্য হাতে শ্যাম্পেনের (মদ) গ্লাস। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ছবিতে এমন লুকে দেখা যায় সদ্য মা হওয়া ৩৯ বছরের রাধিকাকে।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যের লন্ডনের রয়্যাল ফেস্টিভ্যালে বসেছিল ৭৮তম ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস (বাফটা) অ্যাওয়ার্ডেসের আসর। এর লাল গালিচায় হাঁটেন রাধিকা। এ অভিনেত্রীর কন্যার বয়স মাত্র ২ মাস ৫ দিন। জাঁকজমক এই অনুষ্ঠানের ফাঁকে বাথরুমে গিয়ে ছোট্ট কন্যার জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করেন এই অভিনেত্রী।
বাফটা অ্যাওয়ার্ডস প্রদান অনুষ্ঠানে ওয়াশরুমে গিয়ে ব্রেস্ট পাম্প করেন রাধিকা আপ্তে
আরো পড়ুন:
৪ দিনে রাশমিকা-ভিকির সিনেমার আয় ২৭৩ কোটি টাকা
কথিত প্রেমিকের সঙ্গে কৃতি, উড়ছে বিয়ের গুঞ্জন
রাধিকা ছবিটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লেখেন, “নাতাশাকে ধন্যবাদ। কারণ তার জন্য বাফটা অ্যাওয়ার্ডসে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে ব্রেস্ট পাম্পিংয়ের ব্যবস্থাই কেবল করেননি। বরং আমার জন্য শ্যাম্পেনও এনে দিয়েছিলেন। নতুন মা হওয়া এবং কাজ করা যেমন কঠিন, তেমনি এই সময়ে যত্ন নেওয়া ও সংবেদনশীলতা আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পে বিরল এবং প্রশংসিত।”
সন্তানের প্রতি মা হিসেবে রাধিকার যত্ন ও দায়িত্ব বোধ দেখে নেটিজেনদের অনেকে প্রশংসা করছেন। আবার তার হাতে শ্যাম্পেনের গ্লাস দেখে সমালোচনা করছেন। পাশাপাশি বাথরুমে গিয়ে ব্রেস্ট পাম্পিং করার কারণে বাফটার আয়োজকদের নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ এত বড় একটি অনুষ্ঠানে ‘ব্রেস্টফিডিং জোন’ নেই।
লন্ডনে নাচ শিখতে গিয়ে ২০১১ সালে ব্রিটিশ ভায়োলিন বাদক ও সংগীতজ্ঞ বেনেডিক্ট টেলরের সঙ্গে রাধিকার পরিচয় হয়। ২০১২ সালে বিয়ে করেন এ জুটি। বিয়ের ১২ বছর পর বাবা-মা হন এই দম্পতি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে
সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।
এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।
এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’
আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।