অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার একুশে পদক বিতরণ করবেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সেক্রেটারি ফয়েজ আহম্মদ এ তথ্য জানান।

এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পদক বিতরণ করা হবে। পদক বিতরণ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার দেশের ১৮ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দলকে একুশে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। 

আরো পড়ুন:

এপ্রিলে হতে পারে অধ্যাপক ইউনূস-মোদি বৈঠক: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সরকারের পথচলায় বাধা সৃষ্টি করতে তারা ট্রাম্পের কাছেও গিয়েছিল: প্রধান উপদেষ্টা

পদকপ্রাপ্তরা হলেন—চলচ্চিত্রে আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সঙ্গীতে ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) ও ফেরদৌস আরা, আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুন ও চিত্রকলায় রোকেয়া সুলতানা। সাংবাদিকতায় মাহ্ফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর), গবেষণায় মঈদুল হাসান, শিক্ষায় ড.

নিয়াজ জামান।

এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেহদী হাসান খান (দলনেতা), রিফাত নবী (দলগত), মো. তানবিন ইসলাম সিয়াম (দলগত) ও শাবাব মুস্তাফা (দলগত)। সমাজসেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর), ভাষা ও সাহিত্যে হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর) ও শহীদুল জহির (মো. শহিদুল হক) (মরণোত্তর)। সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে মাহমুদুর রহমান, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় ড. শহিদুল আলম এবং ক্রীড়ায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।
 

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আসামিকে বাদ দিতে হলফনামা, বাদী কৃষক দল নেতাকে শোকজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় জুলাই আন্দোলনে হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় পাঁচ আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে দুটি হলফনামা দিয়েছেন বাদী কৃষক দল নেতা শাহ আলম পাঠান। টাকার বিনিময়ে তিনি হলফনামা দিয়েছেন, এমন অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে জেলা কৃষক দল।

শাহ আলম পাঠান নাসিরনগর উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব। ৪ জুন পাঁচজনের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে আদালতে হলফনামা দেন শাহ আলম। সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা তৈরি হয়।

যে পাঁচজনকে বাদ দিতে হলফনামা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন উপজেলার নূরপুর গ্রামের মো. মাসুদ, গোকর্ণ গ্রামের শেখ মো. জোবায়ের হাসান, বেনিপাড়ার মামুন মিয়া, টেকানগরের জসিম উদ্দিন কায়কোবাদ ও নূরপুর গ্রামের শামসুল আরেফিন মিঞা। তাঁরা যথাক্রমে মামলার ৯৭, ৭৯, ৯১, ১০৫ ও ৮৭ নম্বর আসামি। তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও কোনো পদ–পদবি ছিল না।

হলফনামা দেওয়ার বিষয়টি জানাজানির পর গত শুক্রবার রাতে জেলা কৃষক দলের দপ্তরে দায়িত্বে থাকা যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আল আমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শাহ আলমকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। সাত দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবু শামীম মো. আরিফ ও সদস্যসচিব জিল্লুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাহ আলম পাঠানের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী সাত দিনের মধ্যে জেলার দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছে সশরীর হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে জড়ো হন। তখন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শাহ আলম ১১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। গত ২ নভেম্বর মামলাটি থানায় নথিভুক্ত হয়। ওই মামলার পাঁচ আসামিকে বাদ দিতে আদালতে হলফনামা দেওয়া হয়েছে।

একটি হলফনামায় বাদী উল্লেখ করেন, লিখিত এজাহারে মাসুদ, জোবায়ের, মামুন ও জসিম উদ্দিনের নাম আসামির শ্রেণিভুক্ত ছিল না। অসাবধানতার কারণে চারজনের নাম আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাঁদের চারজনকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না, জানেন না। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, তাঁরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।

আরেকটি হলফনামায় বলা হয়, আসামি শামসুল আরেফিন মিয়া ২০১৪ সালে উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি, সাবেক সদস্যসচিব ও ২০০৩ সালের উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন। অসাবধানতাবশত ভুলের জন্য তিনি (শাহ আলম) অনুতপ্ত এবং অনুশোচনা প্রকাশ করছেন।

তবে বিষয়টি জানাজানির পর সমালোচনামুখর হন বিএনপি ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা। তাঁরা বলেন, শাহ আলম ২০২০ সালে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে কেক কেটে মুজিব বর্ষ পালন করেন। তাঁর বাবা মো. ইয়াছিন পাঠান উপজেলার চাতলপাড় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

নাসিরনগর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ইয়াছিন মাহমুদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, শাহ আলম মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে হলফনামা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ছত্রচ্ছায়ায় যাঁরা ছিলেন, এখন তাঁরাই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে লিপ্ত।

তবে কৃষক দলের সদস্যসচিব শাহ আলম পাঠান বলেন, ‘পাঁচজনকে মামলায় ভুলবশত সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই হলফনামা দিয়েছি। জেলা কৃষক দলের কাছে তথ্য গিয়েছে যে আমি টাকার বিনিময়ে এমন করেছি, যা মোটেও সত্য নয়। স্থানীয় বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মূল ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ