ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বিভেদ আরও বাড়ল। এতে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যে প্রচেষ্টা চলছে, তার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে তহবিল ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছে; কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ নীতি পরিবর্তন করেছে এবং ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।

গত বছর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলনস্কির পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ নিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘নির্বাচন ছাড়া একজন স্বৈরশাসক জেলেনস্কির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, না হলে তাঁর আর কোনো দেশ থাকবে না।’

ইউক্রেনীয় আইনে যুদ্ধের সময়ে নির্বাচনের প্রয়োজন নেই।
এর আগে গত মঙ্গলবার ট্রাম্প এক সংবাদ সম্মেলন করে জেলেনস্কির সমালোচনা করেন। রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পাম বিচে নিজের মালিকানাধীন মার-এ-লাগো রিসোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, চলতি মাসেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা আছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, আমার এই যুদ্ধ শেষ করার ক্ষমতা আছে। আমার মনে হয়, যুদ্ধ শেষ করা–সংক্রান্ত আলোচনা ভালোভাবেই এগোচ্ছে। কিন্তু আমি আজ ইউক্রেনের নেতাদের বলতে শুনেছি, “আহা, আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।” ভালো কথা, আমি বলতে চাই, আপনারা সেখানে তিন বছর ছিলেন। আপনাদের এটা শেষ করা দরকার ছিল।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ