সাভারে একটি তুলার গোডাউন ও আশুলিয়ায় বিস্কুট তৈরির কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার নামাবাজার বাঁশপট্টি এলাকায় তুলার গোডাউনে ও আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকার নিউ অলিম্পিয়া বিস্কুট কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাভার নামাবাজার বাঁশপট্টি এলাকায় তারা মোল্লার মালিকানাধীন তুলার গোডাউনে হঠাৎ আগুন দেখতে পায় স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে দ্রুত সাভার ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপণের কাজ শুরু করে। এ সময় আগুনে গোডাউনের মালামালসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে গেছে। তবে আগুনে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাভার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় আগুনে তুলার গোডাউনটি পুরোপুরি পুড়ে গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় অবস্থিত নিউ অলিম্পিয়া বিস্কুট কারখানার দোতলায় একটি টিনে শেড কক্ষ থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসে জানালে জিরাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে টানা এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় আগুনে কারখানার ভিতরে থাকা বেশকিছু মালামাল পুড়ে গেলেও কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া কারখানাটিতে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারী সবাই নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পেরেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অলিম্পিক বিস্কুট কারখানার টিনশেডের বিল্ডিংয়ের একটি কক্ষে হঠাৎ আগুন দেখতে পায় কারখানার শ্রমিকরা। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায় এবং ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে জিরাবো মডার্ন ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জিরাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সায়েম মাসুম বলেন, বেলা সাড়ে ১১টায় আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকার নিউ অলিম্পিয়া বিস্কুট কারখানায় আগুন লাগার খবর পাই। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অগ্নিকাণ্ডের প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: খবর প য় র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ