সম্মেলন ঘিরে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু, আটক ৩
Published: 20th, February 2025 GMT
বাগেরহাটের কচুয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত বিএনপি নেতা শওকত হোসেন (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি কচুয়া উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দেপাড়া বাজার এলাকায় নিজ দলীয় দুই পক্ষের সংঘর্ষে শওকত হোসেন গুরুতর আহত হয়। এ সময় ধোপাখালি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ও নিহতের ভাই লিয়াকত হোসেনসহ অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
ওই সময় শওকতকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল, পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরবর্তীতে হামলার ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাদী হয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফজাল হাওলাদারসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির নামে মামলা করেন। তবে এখন পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ।
নিহত শওকত হোসেন কচুয়া উপজেলার ছিটাবাড়ি গ্রামের ইমান উদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এদিকে বিএনপির এই নেতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দেপাড়া বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপির নেতাকর্মী ও নিহতের স্বজনরা। এছাড়া বিক্ষুব্ধ জনতা হামলাকারী আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীর গ্রামের বাড়ি ঘেরাও করে রাখলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছে হায়দারকে আটক করে। রাত পর্যন্ত দেপাড়া বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থান রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আতঙ্কে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। পরে দেপাড়া বাজার থেকে সদর থানা পুলিশ বিএনপির আরও দুইজনকে আটক করেছে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম ও পরিচয় জানাতে পারেনি।
নিহত বিএনপি শওকত হোসেনের ভাই বিএনপি নেতা লিয়াকত হোসেনের বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফজাল হাওলাদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা আমাদেরকে আহত করেন। দীর্ঘ ৯ দিন চিকিৎসার পর আমার ভাই মারা গেল। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। কচুয়া, বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছে। পরিস্থিতি এখনো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ আরও দুইজনকে আটক করেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ দ ই গ র প র স ঘর ষ শওকত হ স ন ন ব এনপ র সদস য অবস থ আফজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর
গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার বিমা দাবি নিষ্পত্তি করে ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ। তাদের অভিযোগ, বিমা কোম্পানিগুলো নানা ধরনের পদ্ধতিগত জটিলতা ও পলিসির শর্তের অপব্যাখ্যা করে বিমা দাবি পরিশোধে বিলম্ব করছে। অনেক ক্ষেত্রে দাঙ্গা, হাঙ্গামা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা–সংক্রান্ত ক্ষতির অজুহাতে বিমা দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, যা বিমাশিল্পের মূলনীতির পরিপন্থী।
আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে দেওয়া এক চিঠিতে বিমা দাবি পরিশোধের অনুরোধ জানান বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আমাদের অনেক সদস্যের কারখানা, গুদাম ও অন্যান্য স্থাপনা ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। আকস্মিক এই সহিংসতায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।’
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, সব ধরনের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি মোকাবিলায় প্রায় প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানই যথাযথ প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অগ্নিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির বিপরীতে বিমা পলিসি নিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, ঘটনার পর বছর পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ বিমা দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
চিঠিতে বিটিএমএ সভাপতি জানান, গত ৩ মার্চ সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার উত্থাপিত বিমা দাবি নিয়ে সভা হয়। এতে বিমা দাবি নিয়ে বিভিন্ন বিমাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির বিবরণ ও ব্যাখ্যা দেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনাগুলো গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হওয়ায় তা স্ট্যান্ডার্ড ফায়ার পলিসি (এসএফপি) বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অল রিস্ক (আইএআর) পলিসির আওতায় কোনো বিমা দাবি পরিশোধযোগ্য হবে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার মালিকেরা চরম হতাশায় ভুগছেন।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে সব নন-লাইফ বিমা কোম্পানিকে সুস্পষ্ট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গত বছরের জুলাই-আগস্টের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিমা দাবি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, বিমা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তির বিধানটির কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।