ববিতে অনুষ্ঠান আয়োজনে বিধি-নিষেধ আরোপ
Published: 20th, February 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মুক্তমঞ্চের সব অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ববি প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সানি স্বাক্ষরিত এক নোটিসে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নোটিসে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যাচ ভিত্তিক বন্ধু-বান্ধব একত্রে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিকনিক ও বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে অনুমতি ব্যতীত এসব অনুষ্ঠানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে গান বাজানো হয়।
এছাড়াও ক্লাস ও পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শব্দে বক্স বাজিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ফলে ক্লাস ও পরীক্ষা পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটে এবং হলে থাকা শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও নামাজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়।
নোটিসে যেকোন অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে; অনুষ্ঠানটি অনুমতিপ্রাপ্ত নির্ধারিত স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; বিকেল সাড়ে ৪টার আগে কোন ধরনের শব্দযন্ত্র বাজানো যাবে না; একাডেমিক কার্যক্রম চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে কোন প্রোগ্রাম করা যাবে না।
অন্য নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- অন্য বিভাগের একাডেমিক কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে; শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে রাত ৯টার মধ্যে সকল ধরনের অনুষ্ঠান শেষ করা বাধ্যতামূলক; বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের আজান, নামাজ ও হলগুলোর নামাজের সঙ্গে মিল রেখে উচ্চ শব্দে শব্দযন্ত্র বাজানো বন্ধ রাখতে হবে; অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তার দায়দায়িত্ব আয়োজকদের বহন করতে হবে।
জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে নানা অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় পার করছে ববি মুক্তমঞ্ছ। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সংসদের অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে গান বাজানো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আনুষ্ঠান চলাকালে হলের শিক্ষার্থীরা মুক্তমঞ্চে বিশৃংখলা সৃষ্টি ও চেয়ার ভাঙচুর করে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে এ বিধি-নিষেধ জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিদিনই এমন আয়োজন হচ্ছে মুক্তমঞ্চে। উচ্চশব্দে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত গান বাজানো হয় এবং ক্যাম্পাসে অবাধে চলে মাদকদ্রব্য সেবন। শব্দের কারণে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটে মুক্তমঞ্চের দুইপাশে থাকা চার হলের শিক্ষার্থীদের। রাত সাড়ে ৯টার ভিতরে সব অনুষ্ঠান শেষ করা উচিৎ।
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক