নগদ অর্থ উত্তোলন ও পরিবহনে ‘মানি এসকর্ট’ সেবা দেবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ জন্য সহায়তাপ্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট থানা অথবা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি। আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পবিত্র রমজান মাস ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থ লেনদেন ও স্থানান্তর বেড়ে যায়। কোনো ব্যক্তি, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশি অর্থ স্থানান্তরের জন্য পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন মনে করলে ডিএমপি তাদের এসকর্ট সেবা দেবে। এ ক্ষেত্রে যারা এসকর্ট সেবা নেবে, যানবাহনের ব্যবস্থা তাদের করতে হবে।

এসকর্ট সেবা পেতে পুলিশ কন্ট্রোল রুমসহ যোগাযোগের বেশ কিছু নম্বর দিয়েছে ডিএমপি। সেগুলো হলো ২২৩৩৮১১৮৮, ০২৪৭১১৯৯৮৮, ০২৯৬১৯৯৯৯, ০১৩২০-০৩৭৮৪৫, ০১৩২০-০৩৭৮৪৬ এবং জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯।

এ ছাড়া অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তরের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। নিয়মগুলো হলো:

বড় অঙ্কের অর্থ একা বহন না করে সঙ্গে অতিরিক্ত একাধিক বিশ্বস্ত ব্যক্তি রাখা যেতে পারে। অর্থ বহনসংক্রান্ত কোনো তথ্য আগেই অন্যকে জানানো থেকে বিরত রাখা।

পায়ে হেঁটে অথবা রিকশায় অর্থ বহনের পরিবর্তে গাড়িতে অর্থ বহন করা যেতে পারে।

নগদ অর্থ বহনের আগে নিশ্চিত হতে হবে যেন আপনার দোকান বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কেউ দুষ্কৃতকারীদের তা জানিয়ে না দেয়।

দৈনিক নগদ অর্থ বহনের প্রয়োজন হলে মাঝেমধ্যে ভিন্ন পথ ব্যবহার করা যেতে পারে, যেন দুষ্কৃতকারীরা আগেই ওত পেতে থাকার সুবিধা নিতে না পারে।

অর্থ বহনের সময় ব্যাগ এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে, যেন বাইরে থেকে বোঝা না যায়। এতে দুষ্কৃতকারীরা প্রলুব্ধ হওয়ার সুযোগ পাবে না।

পুরো টাকা একসঙ্গে না রেখে বিভিন্ন জায়গায় যেমন পকেটে, ব্যাগে, সঙ্গে থাকা ব্যক্তির কাছে ভাগ করে রাখা যেতে পারে।

গলি কিংবা নির্জন পথ ব্যবহারের পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত ব্যস্ত সড়ক ব্যবহার করা যেতে পারে।

ট্রাফিক সিগন্যাল বা জ্যামে পড়লে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে।

সিসিটিভি আছে এমন ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করার চেষ্টা করতে হবে। ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর বোঝার চেষ্টা করতে হবে সন্দেহজনক কেউ আপনাকে অনুসরণ করছে কি না।

বড় অঙ্কের অর্থ পরিবহনের কাজটি রাতে না করে দিনের বেলায় সম্পন্ন করা যেতে পারে।

এটিএম বুথের ভেতরে থাকা কোনো গোপন ক্যামেরায় আর্থিক লেনদেনে ব্যবহৃত গোপন নম্বরটি ধারণ করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের কাজটি চেকের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেতে পারে।

বড় অঙ্কের টাকা পরিবহনে প্রয়োজনে পুলিশ এসকর্ট সেবা গ্রহণ করা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র পর বহন ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ