ট্রাম্প কি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছেন
Published: 20th, February 2025 GMT
তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তৎপরতায় ইউক্রেনকে একপ্রকার পাশে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করলেও পাত্তা দিচ্ছেন না কিয়েভকে। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আক্রমণ করে কথা বলতেও ছাড়েননি ট্রাম্প।
জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো মোটেও ইতিবাচক নয়। যেমন নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতা ধরে রাখা একজন ‘স্বৈরশাসক’ জেলেনস্কি। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি যুদ্ধে শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে, যে যুদ্ধে ইউক্রেনের বিজয় সম্ভব নয়।
জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের এই আক্রমণাত্মক মন্তব্য বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। আগে থেকেই তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সন্দেহের চোখে দেখেন। তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়ে তদন্ত শুরু করার জন্য জেলেনস্কিকে একবার চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর জেরে প্রথমবারের মতো অভিশংসনের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
বুধবার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামিতেও জেলেনস্কির সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের বিপুল সহায়তার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনি (জেলেনস্কি) যদি আরেক বছর (বাইডেন) প্রশাসনের অধীন থাকতেন, তাহলে এত দিন আপনাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে থাকতে হতো। আর এখন এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না।’
এদিকে ট্রাম্পকে নিয়ে পাল্টা মন্তব্যও করেছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে কিয়েভকে যুক্ত না করার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ট্রাম্প ‘অপতথ্যের জগতে বসবাস করছেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, বুধবারের আগে থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাঁদের হতাশা বাড়ছিল, তবে জেলেনস্কির মন্তব্যের পর তা আরও বেড়েছে।
ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
খামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন ট্রাম্প
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা কয়েক দিন আগে আটকে দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এমন সময় এ খবর সামনে এসেছে, যখন ইরানে চালানো হামলার প্রথম দিনই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পদের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।
মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না। যতক্ষণ না তারা তা করছে, ততক্ষণ আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বের পেছনে লাগার বিষয়ে, এমনকি আলাপও করছি না।’
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার ফক্স নিউজকে বলেন, ‘কখনো আলাপই হয়নি, এমন অনেক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’
ফক্সের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার দরকার, তা করি।’
নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার একটি ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। তেহরানের সৃষ্ট ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল যা যা প্রয়োজন, তা-ই করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে চলমান এই সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এটি সহজেই শেষ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।