এবার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ফারিণ-প্রীতমের ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’
Published: 21st, February 2025 GMT
সবার ভাষা এক নয়। কারও কাছে দৃশ্যটাই ভাষা। কারও কাছে দৃশ্যভাষা বলে কিছু নেই, শব্দটাই তার সব। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের কাছে দৃশ্য থেকে ভাষা উৎসারিত হয় না, বরং তারা শব্দকে অনুসরণ করে দৃশ্য তৈরি করেন অন্তরজগতে। ভাষার মাসে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ভাষা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং সবার ভাষার প্রতি সম্মান জানাতে বিশেষ ক্যাম্পেইনিং শুরু করেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সিনেমা উপভোগের ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। অডিও ডেসক্রিপশন বা ধারাবর্ণনার মাধ্যমে সিনেমাটি উপভোগ করতে পারবেন তাঁরা। আর এ জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’। এটি ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রকল্পের একটি সিনেমা।
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ সিনেমাটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। ভার্সনটি ২১ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ফ্রিতে উপভোগ করা যাবে মাইজিপি অ্যাপে।
প্রতিষ্ঠানটি তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছে, ‘চরকি ও গ্রামীণফোন এই প্রথম দেখার ভাষায় নিয়ে এল “কাছের মানুষ দূরে থুইয়া” চলচ্চিত্রটি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখন সিনেমাটি পুরোপুরি এক্সপেরিয়েন্স করতে পারবেন অডিও ডেসক্রিপশনসহ।’
অডিও ডেসক্রিপশনসহ ট্রেইলার লিংক: https://fb.
প্রীতম হাসান-তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন শিহাব শাহীন। নির্মাতার ভাষ্যে, ‘দর্শকেরা দেখবে বলেই আমরা কাজ করি। কিন্তু ভেবে দেখি না, সবার দেখাটা এক নয়। এ জন্য চরকি ও গ্রামীণফোন নিয়েছে দারুণ পদক্ষেপ।’
জানা গেছে, সংলাপগুলো ঠিক রেখে পুরো সিনেমাটি বর্ণনা করা হয়েছে। চরিত্রের অবস্থান, পরিবেশ, মুহূর্ত, স্থানের ধারাবর্ণনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে নতুন ভার্সনের সিনেমাটি। এতে ধারাবর্ণনা দিয়েছেন অভিনেতা ইন্তেখাব দিনার এবং ধারাবর্ণনাটি লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ।
এমন উদ্যোগে থাকতে পেরে খুশি চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি। তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি অনেক তৃপ্তির যে চরকির একটা সিনেমা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের উপভোগের উপযোগী করে প্রস্তুত করতে পেরেছি আমরা। এর মাধ্যমে আমরা সব ভাষা, সবার ভাষার প্রতি সম্মান জানাচ্ছি।’কাছের মানুষ দূরে থুইয়ায় তাসনিয়া ফারিণ ও প্রীতম হাসান। চরকি
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান
লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।
তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।