রাজশাহী অঞ্চলে হঠাৎ বৃষ্টি, আমের মুকুলের সর্বনাশ
Published: 22nd, February 2025 GMT
ফাল্গুনের শুরুর দিকে আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহীতে ৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। চাষিরা বলছেন, এই বৃষ্টিতে আমের মুকুলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।
বাঘার আমচাষী শফিকুল ইসলাম সানা বলেছেন, বাঘায় বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টি আমের মুকুলের সর্বনাশ করেছে। তিনি বলেন, বাঘা উপজেলার অধিকাংশ গাছের মুকুল এসেছে। সেই মুকুলের ফুল ফুটে এখন পরাগায়ন চলছিলো। এমন অবস্থায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় অধিকাংশ মুকুল পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
পুঠিয়া উপজেলার আমচাষী সিরাজুল ইসলাম সমকালকে বলেন, পুঠিয়া উপজেলার মুকুলগুলো কেবল বের হয়েছে। এখনো মুকুলের ফুল ফোটেনি। তাই বৃষ্টিতে মুকুলের ক্ষতি হবে না। তবে বৃষ্টির আগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায় বেশ কিছু মুকুল ঝরে গেছে। এছাড়া যেসব গাছের মুকুল এখনো ফুটে বের হয়নি- সেগুলোতে এখন আর মুকুল বের হবে না। বৃষ্টির পানি পেয়ে এসব গাছে এখন নতুন পাতা বের হবে।
তিনি আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে কুয়াশা না থাকলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে যাবে। তবে কুয়াশায় সূর্যর দেখা না পাওয়া গেলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকার আমচাষী সোহাগ আলী বলেন, ঝড়ে সব কচি মুকুল ঝরে গেছে।
রাজশাহী ফল গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছর ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্টিক টন। তবে গতবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, এবারো সেটাই লক্ষ্যমাত্রা।
তিনি বলেন, যেসব মুকুলের ফুল ফুটে আছে- এই বৃষ্টিতে সেগুলোর ক্ষতি হবে। যেগুলোর ফুল এখনো ফুটেনি সেগুলোর কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সামনে ঘন কুয়াশা বা নিম্মচাপ হলে আরও বেশি ক্ষতি হবে।’
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহীতে ৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিলো ৭ থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল।
তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে শুধু রাত আর সকালে কুয়াশা থাকবে। দিনে রোদ থাকবে। নিম্নচাপের কোনো সম্ভাবনা নেই। আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫