বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শরীয়তপুরের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল কাঁচিকাটায় বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকেলে ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের মুন্সিবাজার এলাকায় আয়োজিত এই জনসমাবেশে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন, যা সভাস্থলকে জনস্রোতে রূপ দেয়।

স্থানীয় বিএনপি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি ছিলেন জেলার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। মিছিল-মিটিং করতে না পারা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাবাসের কারণে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট বিএনপির আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শরীয়তপুর বিএনপি নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ঘোষণা দেন, সেই দফাগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটায় এই জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়। দুপুর গড়াতেই পদ্মা নদীবেষ্টিত এই প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে নেতাকর্মীরা ফেস্টুন, ব্যানার হাতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ট্রলার ও পায়ে হেঁটে সভাস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। তাদের অংশগ্রহণে মুহূর্তেই সভাস্থল জনস্রোতে পরিণত হয়।

জনসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ। তিনি বলেন, সর্বপ্রথম প্রয়োজন সংসদ নির্বাচন। যে দল ক্ষমতায় আসবে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে স্থানীয় নির্বাচন পরিচালিত হবে। এটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নয়। অচিরেই সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক এবং সেই নির্বাচন সর্বদলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হোক। একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে এবং তারাই সংসদ গঠন করবে, যেখানে পরবর্তী সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা হবে।

সমাবেশে কাঁচিকাটা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির মোয়াল্লেম বেপারীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম এ হামিদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লুর রহমান মুকুল, নড়িয়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর, সখিপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মোজহারুল ইসলাম সরদারসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র স জনসম ব শ ন ত কর ম গঠন ক রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাঁকো বিড়ম্বনার ৪০ বছর 
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা