টোভ্যার শহরের ভেতর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমেই আমি যা লক্ষ করলাম, সেটি হলো সেনাবাহিনী। সবখানেই তারা—বিলবোর্ডে, ভবনের পাশে, বাসস্টপেজে; ‘রাশিয়ার নায়ক’ লেখা বিভিন্ন প্রতিকৃতিতেও।

কালাশনিকভ রাইফেল হাতে সেনাদের পোস্টারে রাশিয়াকে ভালোবাসতে, দেশকে নিয়ে গর্ব করতে ও দেশকে রক্ষায় উৎসাহিত করা হয়েছে জনসাধারণকে। অন্য কথায়, সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে ও ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ক্রেমলিন শুরু থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে যুদ্ধ না বলে বিশেষ সামরিক অভিযান বলে আসছে। রাশিয়ার অনেক মানুষের কাছে এ যুদ্ধ এমন একটি ঘটনা, যা তাঁরা শুধু টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখেছেন। কিন্তু অ্যানার মতো মানুষের কাছে এটি অনেক বেশি বাস্তব।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধের তিন বছর পূর্তি আজ। তবে এত দিন পরও রাশিয়া নতুন করে সেনা নিয়োগের চেষ্টা করছে।

আপনি যদি টোভ্যারে থাকেন, তবে বুঝতে পারবেন, শহরের চারপাশে সামরিক দৃশ্যপট ফুটে ওঠা সত্ত্বেও মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। শহরটি সম্মুখসারির যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কয়েক শ মাইল দূরে।

মিখাইল নামের স্থানীয় একজন শিক্ষক বিবিসিকে বলেন, ‘আপনি শুধু চারপাশে তাকান। পাশ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। দোকানপাট সব খোলা। কোনো গোলা এসে পড়ছে না। আমাদের মধ্যে নেই কোনো আতঙ্ক। সম্ভাব্য হামলার মুখে পড়া নিয়ে কোনো সাইরেনও শুনতে হচ্ছে না। ছুটতে হচ্ছে না কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে।’

ক্রেমলিন শুরু থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘যুদ্ধ’ না বলে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আসছে। রাশিয়ার অনেক মানুষের কাছে এ যুদ্ধ এমন একটি ঘটনা, যা তাঁরা শুধু টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখেছেন। কিন্তু অ্যানার মতো কারও কারও কাছে এটি অনেক বেশি বাস্তব।

আপনি শুধু চারপাশে তাকান। পাশ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। দোকানপাট সব খোলা। কোনো গোলা এসে পড়ছে না। আমাদের মধ্যে নেই কোনো আতঙ্ক। সম্ভাব্য হামলার মুখে পড়া নিয়ে কোনো সাইরেনও শুনতে হচ্ছে না। ছুটতে হচ্ছে না কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে।মিখাইল, রাশিয়ার নাগরিক  

বিবিসির প্রতিনিধির সঙ্গে রাস্তায় আলাপচারিতাকালে অ্যানা বলেন, ‘আমি এমন অনেক লোককে চিনি, যাঁরা যুদ্ধে গেছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আর বাড়ি ফেরেননি। আমি চাই (এ যুদ্ধ) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হোক।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমনটাই চান বলে দাবি করেছেন। ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে না ডেকে ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে রাশিয়ার নেতাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মস্কোর সঙ্গে তাঁর আলোচনা সম্পর্কে রুশদের মতামত কী—এ বিষয়ে অ্যানার মত, ‘(এ যুদ্ধে) ট্রাম্প একজন অপ্রত্যাশিত বিজয়ী। আমি জানি না তাঁর কাছ থেকে কী আশা করা উচিত।’

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের দেওয়া শত শত কোটি ডলারের সহায়তা ফেরত চান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গতকাল শনিবার ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের বার্ষিক জমায়েতে এ কথা সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন তিনি। তবে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় ইউক্রেনকে যুক্ত করা হয়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে কয়েক দফা আক্রমণাত্মক কথাও বলেছেন ট্রাম্প।

ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে ট্যাংক নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন রুশ সেনারা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।

জেডি ভ্যান্স বলেন, তাঁর যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।

গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।

স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।

স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।

জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাঁকে তাঁর আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’

এ বছর জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে জেডি ভ্যান্স ও তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স