ওষুধ প্রস্তুতকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) কর্তারাই সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেরা কোম্পানি খুলে মালামাল সরবরাহ করছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট অভিযানে মিলেছে এর সত্যতা।

রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম বলেন, ওষুধ প্রস্তুতকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের কাঁচামাল ক্রয়ে অনিয়ম, অবৈধ আর্থিক লেনদেন ও প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

দুদক জানায়, অভিযানে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির দুই জন কর্মকর্তা সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেরা কোম্পানি খুলে উক্ত প্রতিষ্ঠানে মালামাল সরবরাহ করায় এরইমধ্যে তাদের চাকরিবিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিকভাবে সত্যতা রয়েছে বলে অভিযানে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। টিম প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনায় জানতে পারে, বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে শুধু মৌখিক পরীক্ষা নিয়েই চাকরি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিধিবহির্ভূতভাবে বাইরের কোম্পানি থেকেও ওষুধ উৎপাদন করা হয় মর্মে অভিযানকালে তথ্য পায় টিম।

অভিযানে সংগৃহীত তথ্য বিস্তারিতভাবে যাচাইপূর্বক প্রাপ্ত অনিয়মের বিষয়ে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে স্বাস্থ্যখাত ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) এ মোটা অঙ্কের অবৈধ আর্থিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতি, প্রয়োজনের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ ওষুধ উৎপাদন বাড়েনি, উল্টো কমেছে।

অভিযোগ ছিল, খোদ প্রতিষ্ঠানটির কর্তারাই সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেরা কোম্পানি খুলে এখানে মালামাল সরবরাহ করতেন। বছরের পর বছর এভাবে চলতে চলতে পঙ্গু হয়ে গেছে ইডিসিএল। রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটির এমন দশার জন্য দায়ীদের মূলে ডা.

এহসানুল কবির।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা এহসানুল কবির। শুরুতে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেও গত ১০ বছর টানা এই পদে ছিলেন তিনি। সরকারি চাকরির পাশাপাশি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের পদে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে গত ২ অক্টোবর ইস্তফা দেন তিনি। রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের প্রবণতা প্রতিষ্ঠানটিকে পঙ্গু বানানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ কর ব ধ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ