কুয়েট উপাচার্যের বাসভবনে আবারও তালা লাগানোর ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
Published: 25th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের বাসভবনে আবারও তালা ঝোলানোর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে ঢাকা থেকে খুলনায় ফিরে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন, উপাচার্য মুহাম্মদ মাসুদ তাঁর বাসভবনে অবস্থান নিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে বাসভবন থেকে উপাচার্যকে বের হয়ে যেতে সময় বেঁধে দিয়েছেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে পদত্যাগের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সময় বেঁধে দেওয়ার কথা জানান। ‘কুয়েট ১৯’ নামের ওই পেজ থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে সময় বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ছাত্রদল এবং বিএনপির সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাতি, রামদা, পিস্তল দিয়ে নৃশংস হামলা চালায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কুয়েটের সকল শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি উত্থাপন করি। সময় বেঁধে দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের সকল দাবি না পূরণ করায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারংবার মিথ্যাচার ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ভিসিকে বর্জন করে। ২১ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের সকল শিক্ষার্থী মিলে ভিসির বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১১টায় খবর আসে ভিসির বাসভবনের তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে, আমাদের স্থানীয় কিছু শিক্ষার্থীরা সেখানে যায় এবং সত্যতা নিশ্চিত করে। তারা আরও জানতে পারে, ভিসিসহ আরও কিছু অজ্ঞাত মানুষ ভিসি বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, মাসুদ স্যার আমাদের ভিসি না, আমরা মাসুদ স্যারকে ভিসি হিসেবে বর্জন করেছি। তাই মাসুদ স্যার ভিসির বাসভবনে ঢুকতে পারবে না। ভিসি বাসভবনে যারা অবস্থান করছে, ভিসিসহ তাদের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য, আমরা আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছি। এরপর আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবার ভিসির বাসভবনে তালা লাগিয়ে দেব। মাসুদ স্যারের কোনো অধিকার নেই ভিসি বাসভবনে থাকার। আমরা আমাদের নতুন ভিসির জন্য ভিসি বাসভবন সংরক্ষণ করব। এর আগে পর্যন্ত আমরা এখানে তালা দিয়ে রাখব।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু আমরা ভিসিকে বর্জন করেছি, সেহেতু এই বর্জনকৃত ভিসির নিয়োগকৃত তদন্ত কমিটিকে আমরা কেউ গ্রহণ করছি না। এখানে ভিসি তার আস্থাভাজন, আমাদের আন্দোলনে বিতর্কিত শিক্ষকদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই তদন্ত কমিটিকে আমরা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি এবং এই কমিটির অধীন প্রকাশিত প্রতিবেদন, আমরা কখনোই মেনে নেব না। আমরা আমাদের নতুন অভিভাবকের অধীন নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এ বিষয়ে কুয়েট উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।
এদিকে গত রোববার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ স র ব সভবন উপ চ র য র আম দ র সময় ব
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীরে হামলার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদি
কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কখন, কোথায়, কীভাবে হামলা চালানো হবে তা ঠিক করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজ বাসভবনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান-সহ তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। সেখানেই মোদি স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যে, যখন খুশি, যেখানে খুশি পেহেলগামে হামলার বদলা নিতে পারে ভারতীয় সেনা, বিমান ও নৌ-বাহিনী। কীভাবে হামলা চালানো হবে, কীভাবে পরিকল্পনা করা হবে- সে সব সিদ্ধান্তও স্বাধীনভাবেই নেবে এই তিন বাহিনী।
যেমনভাবে মনে হবে, সেরকমভাবেই অভিযান চালানোর জন্য তাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে তিন বাহিনীর ওপরই পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি।
ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশকুমার ত্রিপাঠীর সামনেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, কীভাবে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে, লক্ষ্যবস্তু কী হবে এবং কখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে।
বৈঠক চলে মোট ৯০ মিনিট। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত সপ্তাহেই পাকিস্তানকে ‘কঠোর জবাব’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একই সুর ছিল প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কণ্ঠেও।
সেই আবহেই ভারতে একের পর এক জরুরি বৈঠক চলছে। যার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের ওই বৈঠক হয়।
এর ঠিক এক সপ্তাহ আগের মঙ্গলবারেই জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। তাদের অধিকাংশই পর্যটক ছিলেন।
পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারপর থেকেই কূটনৈতিক দিক থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত।
বন্ধ করা হয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি। নেওয়া হয়েছে আরও একাধিক পদক্ষেপ। জঙ্গি-নিধন অভিযানও চালাচ্ছে ভারত। পেহেলগামে হামলায় যে জঙ্গিরা জড়িত আছে বলে ধারনা করা হচ্ছে, তাদেরকে এখনও ধরা না গেলেও সন্ত্রাসবাদী নিধন অভিযান চলছে। খুঁজে-খুঁজে বের করা হচ্ছে জঙ্গিদের। খবর এনডিটিভি