বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: মূল পরিকল্পনাকারী ও তার ভাই গ্রেপ্তার, রিমান্ডে
Published: 25th, February 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার রাতে নেত্রকোনা জেলার পুর্বধলা থানার সাধুপাড়া গ্রাম থেকে বাস ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার ভাই রাজিব হোসেনকে আশুলিয়া থানার ধানসোনা এলাকার পশ্চিম পলাশবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। আলমগীর হোসেনকে সাতদিনের ও রাজিব হোসেনকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানা হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আহছানুজ্জামান। ‘
পুলিশ সুপার জানান, বাস ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী আলমগীর ও শহিদুল ওরফে মুহিত। তারা মাদকাসক্ত। তাদের দুজনের পরিকল্পনায় এই ডাকাতি সংঘটিত হয়। আলমগীর ডাকাতি করে নেত্রকোনায় পালিয়েছিল। ডাকাতির কিছু মামলামাল তার আপন ভাই রাজিবের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। তাদের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার বড় লাউতারা গ্রামে। এর আগে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকায় লাউতারা গ্রামের মো.
এক নারী যাত্রী ডাকাতির সময় অপর নারী যাত্রীকে ধর্ষণ হতে দেখেছেন’ বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছি। আমরা বাসযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। নারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। বাদীও ধর্ষণের কোনো অভিযোগ করেননি। সবাই শ্লীলতাহানির কথাই বলেছেন এবং খুব বাজেভাবে নারীযাত্রীদের শরীরে স্পর্শ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখন পর্যন্ত আমরা ধর্ষণের কোনো আলামত বা তথ্য পাইনি। তবে আরও তদন্ত চলছে। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত অপরদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সবাইকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হবে।’
এর আগে এ ডাকাতির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো– মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মহিত, শরীয়তপুরের জাজিরা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. সবুজ এবং সাভার পৌরসভার টান গেণ্ডা গ্রামের শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ। তারা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর আলমগ র
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে গভীর রাতে বুড়া-বুড়ির বাড়িতে হামলা
বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় ইট ভাটার মাটি কাটতে না দেয়ায় নিরিহ নিরপরাধ বৃদ্ধ দম্পত্তির (বুড়া-বুড়ি) নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও বাড়ি ঘরে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে একটি ইট ভাটা মালিকের সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা ও ভাংচুরের নেতৃত্ব দিয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এরপর উল্টো তাদের ধরে নিয়ে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছেন। পরে জামিনে বের হয়ে ভুক্তভোগী এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে পুলিশ মামলা না নেয়ায় আতংকে রয়েছেন তারা।
জানা গেছে, বন্দরের জাঙ্গালের বাকদোবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত ৩টি ব্রিক ফিল্ডের মালিক মোঃ আলমগীর হোসেন। সে সাধারন মানুষের জমি জোর পূর্বক দখল করে মাটি কেটে ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছে বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আদালতে বেশ কয়েকটি দেওয়ানী মামলা চলমান রয়েছে।
ভূক্ত ভোগী বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় বৃদ্ধা মহিলা মিনারা বেগম মিনু জানান, আমার জমি জমার বিভিন্ন ভূয়া কাগজপত্র সৃজন করে ইট ভাটার মালিক আলমগীর জোর পূর্বক দখল করে মাটি কাটার চেষ্টা চালায়।
আমি ও আমার পরিবার এতে জোরালো আপত্তি করি এবং আমার স্বামী তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একাধিক দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। এতে ইট ভাটার মালিক আমাদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের প্রানে মেরে ফেলার জন্য আলমগীর নানা ষড়যন্ত্রের ফাদ পাততে থাকে।
আর এ কাজে থানা পুলিশকে সে ম্যানেজ করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের জীবন শেষ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। গত ২০ এপ্রিল রবিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে গভীর রাত ৩টা পর্যন্ত বন্দর থানার দারোগা জলিল, শরীফ ও বন্দর কামতাল ফাড়ির দারোগা মনির সহ প্রায় ২৫ জন পুলিশ আমার বাড়ীর চারদিকে ঘেরাও করে রাখে।
এসময় ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের প্রায় ২০/২৫ জনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী দা, সাবল, বটি, খুন্তি, কুড়াল সহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বাড়ীর গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে বন্দর থানা পুলিশ বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে আমাকে ও আমার বৃদ্ধ স্বামীকে জোর পূর্বক থানার পুলিশ ভ্যানে তুলতে চায়।
বন্দর থানা পুলিশ কোন মামলা ছাড়াই বিনা ওয়ারেন্টে টানা হেচড়া করে আমাদেরকে থানায় নিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমি মামলা ছাড়া বিনা ওয়ারেন্ট আমাদের কেন থানায় নিয়া যাবেন জানেত চাইলে আমাকে ও আমার স্বামী আঃ বাতেন (৬০) কে বেধম প্রহার করেন। আমি একজন বৃদ্ধা মহিলা হওয়া স্বত্তেও পুলিশ আমাকে উপর্যপুরি ৪টি বেত্রাঘাত করে।
তখন আমি পুলিশের হাতে পায়ে ধরে কোন মতে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেলেও গভীর রাত ৩টায় আমার স্বামী আঃ বাতেন (৬০)কে জোরপূর্বক বন্দর থানায় নিয়া যায়।
থানায় নিয়ে ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের ম্যানেজার মজিবরকে বাদী বানাইয়া আমাদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ১০/১৩/১৬ ধারায় একটি মিথ্যা মামলা নং-২৪৪২৫ দায়ের করেন।
বন্দর থানার পুলিশ আমার স্বামীকে ২০ এপ্রিল ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন সহ নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরন করলে বিজ্ঞ আদালত শুনানী অন্তে রিমান্ডের আবেদন না-মঞ্জুর পূর্বক জামিন প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে গত ২২ এপ্রিল আমি বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করলে মহামান্য আদালত আমাকেও জামিন প্রদান করেন।
বর্তমানে আমরা আদালত থেকে জামিন নেয়র পর এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা করতে গেলে ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের দাপটের কারনে পুলিশ কোন মামলা নিচ্ছে না।
এখন আমি আদালতে প্রতিকার চেয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমি এই ঘটনার সুুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে কথা বলতে বন্দর থানার ওসির মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।