খেলাপি ঋণ ৩ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
Published: 26th, February 2025 GMT
২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায়। এর তিন মাস আগে সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন গভর্নর ড.
২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের ঋণের স্থিতি ছিল ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয় ৯ শতাংশ। এরপর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২২ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ঋণ খেলাপি হয় ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেছেন, “আমাদের কাছে যতই নতুন তথ্য আসছ, ততই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন করতে চাই। যেসব ব্যাংক একীভূত করার দরকার, সেগুলো একীভূত করব অথবা নতুন বিনিয়োগকারী নিয়ে এসে পুনর্গঠন করা হবে। তাছাড়া, আইনগত সংস্কার হচ্ছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন রিভিউ হচ্ছে। এসব শেষ হলে ব্যাংক আইন অনুযায়ী ব্যাংক খাত পুনর্গঠন করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৪২ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে খেলাপির হার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীরা নামে-বেনামে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখানো হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর খেলাপির প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে এসেছে।
ঢাকা/এনএফ/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ল র ড স ম বর শ ষ ঋণ র প দশম ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই শিক্ষকের পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আলী রেজওয়ানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে সহকারী অধ্যাপক থেকে প্রভাষক পদে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এমবিএ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকভির আল মাহমুদ ও সাইদ উদ্দিন আহমেদকে মাদক সেবনের অভিযোগে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং আবাসিক হলে অবস্থানের ওপরও এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার বেলা ১১টায় সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়ে সন্ধ্যার পর শেষ হয়। সভায় অর্ধশতাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেসব লিখিত আকারে শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
সিন্ডিকেট সভার একাধিক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এবং বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় আলী রেজওয়ানকে।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তী সময় তদন্তের স্বার্থে ১ অক্টোবর তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে পদাবনতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাদক সেবনের সময় দুই শিক্ষার্থীসহ এক বহিরাগতকে আটক করে প্রক্টরিয়াল টিম। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং এক বছরের জন্য ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও হলে অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় সবার মতামতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু এই সিদ্ধান্ত নয়, আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সবার সম্মতিক্রমেই। আমি আসলে একা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, কিছু চাপিয়েও দিতে পারি না। একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব সিন্ডিকেট সদস্যদের মত থাকে এখানে।’