ডুবলিকেট নয়, সাচ্চা কর্মী দরকার : সজল
Published: 26th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল বলেছেন, আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে যুবদলটা করি। আর আপনারা দীর্ঘ ১৫টি বছর ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। আপনাদেরকে সবার আগে মূল্যায়ন করতে হবে।
রাজপথে ত্যাগী নেতাকর্মীদের রেখেই আগামীতে কমিটি গঠন করা হবে। আমাদের সাচ্চা কর্মী দরকার আমার ডুবলিকেট কোন কর্মীর দরকার নাই। আর এই কমিটিতে ফ্যাসিস শেখ হাসিনার দোসরদের জায়গা দিবেন না।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাঁখার আওতাধীন বন্দর থানা ২৫নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
বুধবার ( ২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল এগারোটায় বন্দরের উত্তর লক্ষণখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ২৫নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা আব্দুর রহমান ও মাহবুল আলমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই কর্মীসভার আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা চাইলে পাঁচশ ও এক হাজার লোক নিয়ে কিন্তু আজকের এই কর্মী সভা করতে পারতাম কিন্তু তা না করে আমরা কিন্তু অল্প সংখ্যক নেতাকর্মী সভা করেছি। কারন আমার হাজার হাজার নেতাকর্মী দরকার নাই আমার ২০ জন হলেই যথেষ্ট। তারাই আগামী দিনে হাজার হাজার নেতাকর্মী তৈরি করবে। আগামী দিনে আমাদেরকে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কমিটি গঠন করতে হবে।
সেই কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের যে প্রার্থী হবে তার পক্ষে গিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে হবে এবং সেই ভোটের মাধ্যমেই বিএনপিকে বিজয়ী করে ক্ষমতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ২৫ নং ওয়ার্ডের মাসুদ আমাদের দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা এরা কিন্তু নকল সোনা না খাঁটি সোনা। এবং তাদের কি দায়িত্ব দেয়া হবে যারা যুবদলের প্রকৃত কর্মী রাজপথের নেতা তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে তারা।
তাদের মতামতের ভিত্তিতে আগামী দিনে ২৫ নং ওয়ার্ড যুবদলের কমিটি দেওয়া হবে। আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছে নেতা কম হোক প্রয়োজনে কর্মী বেশি হবে। নেতা বেশি হলে নেতাদের ভিতরে ওই ফ্যাসিবাদী ও জাতীয় পার্টির দোসরা পদ নেওয়ার জন্য এখানে ঢুকে যেতে পারে। সুতরাং সেই সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন নাই।
প্রয়োজনে ১৫জন নেতৃত্ব দিবে। তারা বের করে আনবে এই অঞ্চলে কোন পরিবারের ছেলেটা ভালো ও কোন পরিবারের ছেলেরা ফ্যাসিস হাসিনার দোসরদের সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমাদের বেশি নেতার প্রয়োজন নাই। প্রয়োজনে তিনজনে নেতৃত্ব দিবে।
আমি একটি কত স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই যারা প্রকৃত নেতাকর্মী তারা অবশ্যই মূল্যায়ন হবেন। যারা রাজপথে কাজ করেছেন তাদেরকে কমিটিতে যে মূল্যায়ন করবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ একটি কর্মী তার পরিবারকে ফেলে নিজের জীবন বাজি রেখে দীর্ঘ সাড়ে ১৫টি বছর ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে।
সুতরাং আপনাদের অবমূল্যায়ন করার কোন সুযোগ নাই। আমরা তার যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে মূল্যায়ন করব।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মী সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন কমল, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ অপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার, যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান খলিল শ্যামল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন সেন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান মৃধা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ, শহিদুল ইসলাম,ওয়াদুদ ভূইয়া সাগর, পারভেজ খান, মোঃ আরমান হোসেন, কামরুল ইসলাম রনি, মিনহাজ মিঠু, আশিকুর রহমান অনি, জুয়েল রানা, কামরুল হাসান মাসুদ, এরশাদ আলী, ফয়েজ উল্লাহ সজল,আলী ইমরান শামীম, তরিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম আপন, শাহীন শরীফ, মাগফুর ইসলাম পাপন, জুনায়েদ আলম ঝলক, ফয়সাল আহমেদ, সাইদুর হাসান রিপন, আরিফ খান, কায়সার আহমেদ, এড.
এছাড়াও মহানগর যুবদলের আওতাধীন বন্দর থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের যুবদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ র য বদল র ন ত কর ম ল ইসল ম র রহম ন আম দ র র জপথ দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।