বিনিয়োগ বাড়াতে তরুণদের দক্ষ করার পরামর্শ ইউএইর ব্যবসায়ী নেতা
Published: 26th, February 2025 GMT
বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পরামর্শ দিয়েছেন আবুধাবি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহমিজ আলী আল দাহিরি।
শাহমিজ আলী আল দাহিরি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) নিজেদের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সাফল্য দেখিয়েছে। নিজেদের বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে পারলে ইউএইসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিনিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে। বাংলাদেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ইউএইর পক্ষ হতে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
সংযুক্ত আরব আমিরাত সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সৌজন্যে আবুধাবি চেম্বার আয়োজিত ‘আবুধাবি ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ’ শীর্ষক আলোচনায় এ কথাগুলো বলেন শাহমিজ আলী আল দাহিরি। গত মঙ্গলবার আবুধাবি স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের সম্মেলনকেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ সফররত ২৯ সদস্যবিশিষ্ট ডিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ঢাকা চেম্বারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আবুধাবির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অফিসের হেড অব ইনভেস্টর এনগেজমেন্ট ওমর আল হোসাইনি। তিনি বলেন, পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ইউএই। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তাদের বিনিয়োগে শতভাগ মালিকানা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করছে ইউএই সরকার। এখানকার বিনিয়োগের ইকোসিস্টেমের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারেন।
অপর দিকে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দুই দেশের উদ্যোক্তাদের আরও সম্পৃক্ত করা জরুরি।
গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৩৫ কোটি ডলার ও ৪০ কোটি ডলার। এমন তথ্য উল্লেখ করে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ইউএইর উদ্যোক্তারা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ৩২ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করেছেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো ও লজিস্টিক, তথ্যপ্রযুক্তি, পর্যটন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি খাতে নতুন বিনিয়োগের জন্য দেশটির উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, বস্ত্র ও প্রকৌশলশিল্পে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, পাটজাতপণ্য, ওষুধ বিভিন্ন পণ্য আমদানির ওপর জোর দেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি তাসকীন আহমেদ। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ডিসিসিআই বিজনেস ইনস্টিটিউট (ডিবিআই) ও আবুধাবি স্কুল অব বিজনেস একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চীনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রথম আলো কার্যালয় পরিদর্শন
চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের একদল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁরা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেন। এ সময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। পরিদর্শনকালে তাঁরা প্রথম আলোর বার্তাকক্ষসহ বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন।
ইউনান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষাসফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ভ্রমণে রয়েছেন। সাউথ–সাউথ ইস্ট এশিয়ান কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের আওতায় এ সফরে গত দুই দিন তাঁরা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ইউনান ইউনিভার্সিটি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ‘সাউথ–সাউথ ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি নেটওয়ার্কে’র আনুষ্ঠানিক সদস্য।
পরিদর্শনের সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা প্রথম আলো এবং বাংলাদেশের সংবাদ–সাংবাদিকতার নানা বিষয় নিয়ে জানতে চান। সফররত দলের এক প্রশ্নের জবাবে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, বাংলাদেশে সব সরকারের সময়েই প্রথম আলোকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। প্রথম আলো সব সময় পাঠকের কাছে সত্য প্রকাশ করেছে এবং নৈতিক অবস্থান বজায় রেখেছে। ফলে পাঠক প্রথম আলোর সঙ্গে ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রিজওয়ান-উল-আলম বলেন, প্রথম আলো বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় অনেক ক্ষেত্রেই পথ দেখিয়ে চলছে। তাদের নারী নীতিমালা, শিশুদের জন্য নীতিমালা, এমনকি সাম্প্রতিককালে এআই নীতিমালাও তারা করেছে। ফলে সংকটকালেও প্রথম আলো সত্য প্রকাশ করতে পেরেছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন বলেন, ‘এখন পাঠক ভিডিও প্রতিবেদনের প্রতি বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা আরও বেশি ভিডিও প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কাজ করছি।’
ইউনান ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষকের করা প্রশ্নের জবাবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক হারিসুর রহমান বলেন, প্রথম আলো শুরু থেকেই বাংলাদেশে নিরপেক্ষতা, স্বাধীন ও নৈতিক অবস্থান এবং স্বচ্ছ অবস্থান নিয়ে কাজ করেছে। ফলে পাঠক তাদের এ অবস্থানকে গ্রহণ করেছেন।
ইউনান ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর করা প্রশ্নের জবাব দেন প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির।
সফররত চীনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনে প্রথম আলোর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এর হেড অব মার্কেটিং আজওয়াজ খান।
এ সময় ইউনান ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক চেন জিনজিইং, সহযোগী অধ্যাপক লি ফেং পিং, জেই জিয়ানডং এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌমিক পাল উপস্থিত ছিলেন।