পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী পরিষদ নির্বাচনের ফল বর্জনের ঘোষণা জামায়াত প্রার্থীর
Published: 27th, February 2025 GMT
পটুয়াখালী আইনজীবী পরিষদ নির্বাচনের ফল বর্জন করেছেন জামায়াতে ইসলামী–সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী আইনজীবী নাজমুল আহসান। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ফল বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে সকাল আটটার দিকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের উপস্থিতিতে জেলা আইনজীবী সমিতির ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলন জেলা জামায়াতের আমির আইনজীবী নাজমুল আহসান বলেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীরা পরিকল্পিতভাবে ভোটে নেতিবাচক পরিবেশ তৈরি করেন। বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীরা তাঁদের সমর্থিত ভোটারদের নানা কৌশলে ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার জেলার কয়েকটি উপজেলা থেকে আইনজীবীরা ভোট দিতে জেলা শহরের উদ্দেশে রওনা দেন। বিএনপির প্রার্থীর লোকজন তাঁদের প্রত্যাশিত আইনজীবী ভোটারদের গাড়ি আটকে দিয়ে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে তার ছবি তুলে দেখাতে চাপ প্রয়োগ করেন। ওই আইনজীবীরা তাঁদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভোটকেন্দ্রে আসতে ব্যর্থ হওয়া আইনজীবীরা তাঁকে মুঠোফোনে এসব ঘটনা জানালে তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বিষয়গুলো জানান। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাঁর অভিযোগ আমলে না নিয়ে ভোট গ্রহণ অব্যাহত রাখেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন–২০২৫–২৬–এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইনজীবী মোহসীন উদ্দিন বলেন, জেলা আইনজীবী সমিতিতে মোট ভোটার ৪৬৫ জন। এর মধ্যে ৩৯৬ জন ভোট দিয়েছেন। তা ছাড়া জামায়াত প্রার্থীর সর্বোচ্চ ভোট ছিল ২০টি। সেখানে জামায়াতের সভাপতি প্রার্থী আইনজীবী নাজমুল আহসান ১৩৭টি ভোট পেয়েছেন। এরপরও যদি ভোট নিয়ে অভিযোগ করেন, তা হলে তাঁর কিছু করার নেই।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল আহসান আরও বলেন, ‘১১ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে জামায়াত–সমর্থিত আইনজীবীদের ওপর হামলা ও মনোনয়নপত্র সংগ্রহে বাধা দেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। ওই দিন সাধারণ সম্পাদকসহ তিনটি পদে তাঁদের প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে দেওয়া হয়নি। এ ঘটনার পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের মধ্যস্থতায় সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্তে তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। অথচ পরিকল্পিতভাবে একতরফা নির্বাচন দিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন। জুলাই-আগস্ট পরবর্তী সময়ে এটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব র সমর থ ত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।