যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেন হামলা: আটক হন সুনীল শেঠি
Published: 28th, February 2025 GMT
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। এটি ৯/১১ নামেও পরিচিত। এ হামলার সময়ে দেশটির লস অ্যাঞ্জেলেসে শুটিং করছিলেন সুনীল শেঠি। দুভার্গ্যক্রমে, পুলিশের হাতে আটক হন এই অভিনেতা। প্রায় চব্বিশ বছর পর সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন সুনীল।    
সুনীল শেঠি বলেন, “হোটেলে ঢোকার জন্য লিফটে উঠার পর বুঝতে পারি চাবি নিয়ে আসিনি। সেখানে একজন মার্কিন ভদ্রলোক ছিলেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আপনার কাছে চাবি আছে?’ আমি তো চাবি আনতে ভুলে গেছি আর আমার স্টাফ বাইরে চলে গেছে। লোকটি দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে হট্টগোল শুরু করলেন। পুলিশ চলে এলো। বন্দুক উঁচিয়ে পুলিশ বলল, “শুয়ে পড়ো, না হলে গুলি করব।”
পরের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সুনীল শেঠি বলেন, “আমি জানতাম না কী হচ্ছে। সুতরাং আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে হয়েছিল। তারা আমাকে হাতকড়া পরিয়ে দেয়।” ঠিক সেই সময়ে সিনেমার প্রযোজনা টিম হস্তক্ষেপ করে। হোটেল ম্যানেজারদের একজন ছিলেন পাকিস্তানি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “তিনি একজন অভিনেতা, তার নাম সুনীল।”
আরো পড়ুন:
মা-বাবা হচ্ছেন কিয়ারা-সিদ্ধার্থ
শিবলিঙ্গ জড়িয়ে ধরে বিতর্কে অক্ষয়
পুরো ঘটনাকে ‘পাগলামি’ বলে মন্তব্য করেন সুনীল শেঠি। এ অভিনেতা বলেন, “সেই সময়ে আমরা যেসব ঘটনার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম, তা ছিল পাগলামি। আমি জানতাম না এরপর কী ঘটবে। কারণ এত হট্টগোল ছিল! তা ছাড়া আমার মুখভর্তি দাড়ি ছিল।”
সুনীল শেঠি মনে করেন, লিফটে থাকা ব্যক্তি ইংরেজি বুঝতে না পারার কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম সে ভাষা বোঝে না। হয়তো সে ইংরেজি বলতে পারে না। তাই আমি ইশারায় চাবি, লিফটের কথা বলেছিলাম। কিন্তু এটি আমার বিরুদ্ধে কাজ করেছিল।”
সঞ্জয় গুপ্তা নির্মিত ‘কান্তে’ সিনেমা ২০০২ সালে মুক্তি পায়। ৯/১১ হামলার সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে সিনেমাটির দৃশ্যধারণের কাজ হয়। সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেন— সঞ্জয় দত্ত, অমিতাভ বচ্চন, কুমার গৌরব, মহেশ মাঞ্জেরেকর প্রমুখ।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদার সন্ত্রাসীরা দুটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করে আছড়ে ফেলে নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের সুউচ্চ জোড়া ভবন বা টুইন টাওয়ারে। আরেকটি উড়োজাহাজ আছড়ে পড়ে পেন্টাগনে। হামলা হয় পেনসিলভেনিয়াতেও। এসব হামলায় প্রাণ হারায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ, আহত হয় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলা এটি।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ