মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের সবগুলোতেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয় লাভ করেছেন। 

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্য এ কে এম কাইসার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

জেলা আইনজীবী সমিতি কার্যালয় জানায়, সভাপতি পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম মনোনীত প্যানেলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোকসেদুর রহমান ২৭৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম পান ১৩৭ ভোট এবং জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী আনোয়ার হোসাইন পান ১১৩ ভোট। 

সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী আজাদ হোসেন খান ১৮৬ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন ১৮৩ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মতিউর রহমান আঙ্গুর পেয়েছেন ১১১ ভোট ও শামসুল আলম পেয়েছেন ৪০ ভোট। 

সহসভাপতি পদে আব্দুল জব্বার আলী ৩৩৫ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩৫ ভোট। সহসাধারণ সম্পাদক পদে শাহনাজ পারভীন বাচ্চা পেয়েছেন ৩০৬ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম জসিম পেয়েছেন ১৯৫ ভোট। 

অর্থ সম্পাদক পদে ফারুক মোল্লা পেয়েছেন ৩৮১ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম পেয়েছেন ১০৪ ভোট। পাঠাগার সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সালাহ্ উদ্দিন পেয়েছেন ১৩৫ ভোট। 

ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরিফ হোসেন লিটন পেয়েছেন ৩৪১ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহজাহান মিয়া পেয়েছেন ১৫৭ ভোট। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জহিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৩১২ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জামাল উদ্দিন পেয়েছেন ১৭৭ ভোট। 

নিরীক্ষক দুটি পদে দেলোয়ার হোসেন ৩৪৮ ভোট ও সেলিম আলদীন ৩৩৪ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাপিয়া সুলতানা পেয়েছেন ২২৮ ভোট। 

কার্যনির্বাহী পরিষদের পাঁচটি সদস্য পদে মোস্তাফিজুর রহমান ৪০৭ ভোট, আবুল বাসার ৩৯১ ভোট, নাসির উদ্দিন ৩৭৬ ভোট, শাহিনুর রহমান শাহিন ২৮৩ ভোট এবং মুরাদ হোসেন ২৮১ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলমাছ আলী ২২০ ভোট, আবুল বাশার ১৯৫ ভোট এবং ফেরদৌস হোসেন পেয়েছেন ১৫৯ ভোট।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। ভোটগণনা শেষে রাত পৌনে দুইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্য এ কে এম কাইসার। 

এসময় দুজন নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট সুভাষ রাজবংশী ও অ্যাডভোকেট শেখ আনোয়ার হোসেন নজরুলসহ প্রিসাইডিং অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন। মোট ৬০৯ জন ভোটারের মধ্যে ৫৪০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। 

ফলাফল মেনে নিয়ে পরাজিত প্রার্থীরা বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং তাঁদের সাথে থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বিজয়ীরাও পরাজিত প্রার্থীদের সাথে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

ঢাকা/চন্দন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমর থ ত প র রহম ন আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে

রাজধানীর রমনা থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম ও এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এনায়েত করিম চৌধুরী ও এস এম গোলাম মোস্তফাকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মাসুদ ও মোস্তফাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিমকে গত সোমবার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি র-এর (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে তাঁর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে। এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিমসহ আর কারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, সেটি জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

অপরদিকে এনায়েত করিম চৌধুরীর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছেন, তাঁর আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি বাংলাদেশে এসে গুলশানে অবস্থান করছিলেন।

এনায়েত করিম চৌধুরীর আইনজীবী ফারহান এমডি আরাফ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত নন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে যুক্ত নন।

এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টোরোড থেকে এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মার্কিন নাগরিক।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এনায়েত করিম নিজেকে মাসুদ করিম নামে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান। ২০১৮ সালের ভোটের আগেও তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করেন।

পুলিশ বলছে, গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরী প্রাডো গাড়িতে করে মিন্টোরোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এই সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
  • যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড