১৫টি পদেই বিএনপি সমর্থিত প্যানেলে বিজয়ী
Published: 28th, February 2025 GMT
মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের সবগুলোতেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয় লাভ করেছেন।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্য এ কে এম কাইসার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতি কার্যালয় জানায়, সভাপতি পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম মনোনীত প্যানেলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোকসেদুর রহমান ২৭৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম পান ১৩৭ ভোট এবং জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী আনোয়ার হোসাইন পান ১১৩ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী আজাদ হোসেন খান ১৮৬ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন ১৮৩ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মতিউর রহমান আঙ্গুর পেয়েছেন ১১১ ভোট ও শামসুল আলম পেয়েছেন ৪০ ভোট।
সহসভাপতি পদে আব্দুল জব্বার আলী ৩৩৫ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩৫ ভোট। সহসাধারণ সম্পাদক পদে শাহনাজ পারভীন বাচ্চা পেয়েছেন ৩০৬ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম জসিম পেয়েছেন ১৯৫ ভোট।
অর্থ সম্পাদক পদে ফারুক মোল্লা পেয়েছেন ৩৮১ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম পেয়েছেন ১০৪ ভোট। পাঠাগার সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সালাহ্ উদ্দিন পেয়েছেন ১৩৫ ভোট।
ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরিফ হোসেন লিটন পেয়েছেন ৩৪১ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহজাহান মিয়া পেয়েছেন ১৫৭ ভোট। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জহিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৩১২ ভোট এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জামাল উদ্দিন পেয়েছেন ১৭৭ ভোট।
নিরীক্ষক দুটি পদে দেলোয়ার হোসেন ৩৪৮ ভোট ও সেলিম আলদীন ৩৩৪ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাপিয়া সুলতানা পেয়েছেন ২২৮ ভোট।
কার্যনির্বাহী পরিষদের পাঁচটি সদস্য পদে মোস্তাফিজুর রহমান ৪০৭ ভোট, আবুল বাসার ৩৯১ ভোট, নাসির উদ্দিন ৩৭৬ ভোট, শাহিনুর রহমান শাহিন ২৮৩ ভোট এবং মুরাদ হোসেন ২৮১ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলমাছ আলী ২২০ ভোট, আবুল বাশার ১৯৫ ভোট এবং ফেরদৌস হোসেন পেয়েছেন ১৫৯ ভোট।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। ভোটগণনা শেষে রাত পৌনে দুইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্য এ কে এম কাইসার।
এসময় দুজন নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট সুভাষ রাজবংশী ও অ্যাডভোকেট শেখ আনোয়ার হোসেন নজরুলসহ প্রিসাইডিং অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন। মোট ৬০৯ জন ভোটারের মধ্যে ৫৪০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
ফলাফল মেনে নিয়ে পরাজিত প্রার্থীরা বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং তাঁদের সাথে থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বিজয়ীরাও পরাজিত প্রার্থীদের সাথে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ঢাকা/চন্দন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমর থ ত প র রহম ন আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে: হাইকোর্ট
শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ দিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নেওয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি রেজাউল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।
একই সঙ্গে ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে পরীক্ষার আয়োজন করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ জুলাই এক স্মারকে জানায়। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কেরানীগঞ্জ পাবলিক ল্যাবরেটরি স্কুলের পরিচালক মো. ফারুক হোসেন, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিসহ ৪২ জন চলতি বছর রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই স্মারকের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন। শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতিসংক্রান্ত ১৭ জুলাইয়ের ওই স্মারক (ম্যামো) কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির।
পরে আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ দিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত ১৭ জুলাইয়ে স্মারক অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা অনুসারে সব বেসরকারি অর্থাৎ বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক, রেজিস্ট্রার্ড কিন্ডারগার্টেন, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রেজিস্টার্ড/অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত/স্থাপনা ও প্রাথমিক অনুমতিপ্রাপ্ত চালু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ জন্য ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের ফলে শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই নয়, এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ১৯৮১ সালে প্রবর্তন করা হয় বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এটি চলে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নতুন নীতিমালার আলোকে পিএসসি পরীক্ষা হয়। এতে যারা ভালো করত, তাদের বৃত্তি দেওয়া হতো। তবে করোনার সময় ২০২০ ও ২০২১ সালে তা বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে আবার বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হয়, তবে তা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার নীতিমালার (সংশোধিত–২০১৬) আলোকে। বিভিন্ন কারণে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে এটি বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০২৫ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। বেসরকারি শিক্ষার্থীরাও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে—এমন নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা যাতে পরীক্ষা দিতে পারে সে জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।