রূপগঞ্জে অরিয়ন ইনফিউশন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ
Published: 1st, March 2025 GMT
রূপগঞ্জে ওভার টাইমের বকেয়া টাকা পরিশোধের দাবিতে ইনফিউশন লিমিটেড নামের একটি স্যালাইন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। শনিবার (১ মার্চ) উপজেলার মৈকুলি এলাকায় ঢাকা সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন অবস্থিত স্যালাইন তৈরীর কারখানাটিতে সকাল থেকে শ্রমিকদের মাঝে এই অসন্তোষ দেখা যায়।
পাওনা টাকা পরিশোধ এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বিনয় কৃষ্ণ বাড়ৌইকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানান, মৈকুলি এলাকায় অবস্থিত অরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড নামের একটি স্যালাইন কারখানায় সাড়ে ৩ শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ২৮০ জন পুরুষ শ্রমিক, ২০ জন নারী শ্রমিক ও ৫০ জন স্টাফ কাজ করেন। শ্রমিকদের ৯ মাসের ওবারটাইম, ২০ সালের বোনাস ও ২৪ সালের বোনাস বকেয়া রয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরে বকেয়া ওভারটাইম ও বোনাস পরিশোধ করার জন্যে মালিক পক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে শ্রমিকরা। কিন্তু মালিক পক্ষ দেই দিচ্ছি করে নানা ধরনের টালবাহানা করছে। এছাড়া কারখানার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বিনয় কৃষ্ণ বাড়ৌই শ্রমিকদের নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। এসবের প্রতিবাদ করলেই প্রতিবাদী শ্রমিকদের কারখানা থেকে বের করে দেয়া হয়।
শনিবার সকালে শ্রমিকরা মালিকপক্ষের কাছে তাদের বকেয়া পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বলেন। তখন মালিকপক্ষ কোন প্রকার সমস্যার সমাধান না করে শ্রমিকদের হুমকি শুরু কথা বলেন। এরপরে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ পর শ ধ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।