রাজধানীতে সম্প্রতি ‘আন্তর্জাতিক টয়লেট কনফারেন্স-২০২৫’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী শৌচাগার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘দ্য ফিউচার অব স্যানিটেশন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকার একটি হোটেলে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। টয়লেটবিষয়ক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী দক্ষতা, উন্নত ব্যবস্থাপনা চর্চার ইত্যাদি তুলে ধরার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়ার্ল্ড টয়লেট ডের প্রবর্তক জ্যাক সিম, যিনি ‘মিস্টার টয়লেট’ নামেও পরিচিত। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন টাইলক্সের পণ্যদূত চিত্রতারকা সিয়াম আহমেদ। ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের কন্ট্রিবিউটিং পার্টনার ছিল রিমার্ক এইচবির হাইজিনিক টয়লেট ক্লিনিং ব্র্যান্ড টাইলক্স। এবার বিশ্বজুড়ে টাইলক্স ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক টয়লেট সম্মেলনের কন্ট্রিবিউটিং পার্টনার হিসেবে অংশ নেয়।

ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক সিম দুস্থ মানুষের জন্য চালু করা ‘টাইলক্স হাইজিনিক আবাস’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।

দেশের জনপ্রিয় নায়ক ও রিমার্ক-হারল্যানের পরিচালক শাকিব খান সম্প্রতি সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য হাইজিনিক টয়লেট নির্মাণের জন্য টাইলক্স হাইজিনিক আবাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। দেশের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় হাইজিনিক টয়লেট নির্মাণের প্রথম ধাপের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

টাইলক্সের পণ্যদূত চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ বলেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি হাইজিনিক ক্লিনিং ব্র্যান্ড টাইলক্স তার কার্যকারিতার জন্য ইতিমধ্যে ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানেও কাজ করে চলেছে ব্র্যান্ডটি। সম্প্রতি শুরু হওয়া টাইলক্স হাইজিনিক আবাস ক্যাম্পেইন তারই একটি উদাহরণ।  

টাইলক্সের মনিটরিং ডিরেক্টর জামাল উদ্দীন বলেন, ‘দেশের মানুষের হাতে নকল ও ভেজালমুক্ত পণ্য পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ইজ ন ক ক টয়ল ট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম

দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। 

সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়। 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল  মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।

বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর  অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ