সাহ্রি রোজা রাখার জন্য সহায়ক, সাহ্রির সময় জাগ্রত হওয়া রোজার প্রতি আগ্রহের প্রকাশ। সাহ্রির সময় প্রশান্তির নিদ্রা পরিহার করে শয্যা ত্যাগ করা প্রকৃতই ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতি অনুরাগ। এতে শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং তাহাজ্জুত নামাজ আদায়ের সৌভাগ্য লাভ হয়। সাহ্রির সময় জাগ্রত হওয়া একপ্রকারের মুজাহাদা বা সাধনাও বটে। এ সময় আল্লাহর রহমত নাজিলের সময়, অগণিত আল্লাহপ্রেমিকের ফরিয়াদ ও দোয়া কবুলের সময়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের সবচেয়ে উত্তম সময়। যাঁরা এ বরকতময় সময় জাগ্রত হয়ে আল্লাহর মহান দরবারে দোয়া করে থাকেন এবং ইস্তিগফার করেন, আল্লাহ তাঁদের স্বীয় ভালোবাসায় ধন্য করেন। এ ধরনের আল্লাহপ্রেমিকদের লক্ষ করে পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন, ‘তারা (মুমিনগণ) রাত্রির শেষ অংশে আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে থাকে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৮)।
সাহ্রির বরকতময় ও কল্যাণকর বিভিন্ন দিক রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সুন্নাতের অনুসরণ করা, ইসলামের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, ইবাদতের জন্য শক্তি সঞ্চয় করা এবং তাকওয়া অর্জন করা। স্বাস্থ্য ও মনের অধিক প্রফুল্লতা লাভ করা, ক্ষুধার তাড়নায় সৃষ্ট প্রবৃত্তির বাসনা নিরাময় করা। সাহ্রির সময় দোয়া কবুল হয়। সাহ্রির সময় অধিক পরিমাণে জিকির–আসকার করা এবং তাহাজ্জুত আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা।
আরও পড়ুন রমজানে ওমরাহর আমল২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সাহ্রিতে স্বাস্থ্যসম্মত আহার গ্রহণ করা কাম্য, অধিক পরিমাণে তরল ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত। খাদ্যের গুণাগুণ ও মান যাচাই করে নেওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্য গ্রহণ করতে হবে। দেহ ও মন ভালো থাকলে ইবাদত আনন্দমুখর হবেকখনো যদি অবস্থা এমন হয় যে ফরজ গোসল করে সাহ্রি খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকে; তখন অজু করে বা হাত-মুখ ধুয়ে আগে সাহ্রি খেয়ে নিতে হবে। তারপর গোসল করে ফজরের নামাজ আদায় করবেন। কারণ, সাহ্রি খাওয়ার জন্য পবিত্রতা ফরজ নয় বরং সুন্নাত; আর নামাজ আদায় করার জন্য পবিত্রতা ফরজ। গোসল ফরজ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গোসল করে নিতে হবে, বিনা ওজরে বেশি সময় অপবিত্র অবস্থায় থাকা সমীচীন নয়; আর রমজানে রোজা অবস্থায় অধিকক্ষণ অপবিত্র থাকা মোটেও বাঞ্ছনীয় নয়, এটি মাকরুহ। সাহ্রি খাওয়া সম্ভবপর না হলেও রমজানের ফরজ রোজা রাখতে হবে। নিজেরা সাহ্রি খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, অভাবী অসহায় মানুষকে সাহ্রিতে সহযোগিতা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.
সাওম বা রোজা হলো পানাহার ও যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত থাকা, অল্প আহার করা। তাই সাহ্রিতে এত বেশি খাওয়া ঠিক হবে না, যা সিয়াম বা রোজার উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। মনে রাখতে হবে, রমজান যেন ভোজের আয়োজনে পরিণত না হয়। সাহ্রিতে স্বাস্থ্যসম্মত আহার গ্রহণ করা কাম্য, অধিক পরিমাণে তরল ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত। খাদ্যের গুণাগুণ ও মান যাচাই করে নেওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্য গ্রহণ করতে হবে। দেহ ও মন ভালো থাকলে ইবাদত আনন্দমুখর হবে।
● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]
আরও পড়ুনরোজার কাজা কী১৪ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র সময় আল ল হ র জন য রমজ ন অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।
তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।
এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।
আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।
ঢাকা/আমিনুল