Prothomalo:
2025-08-01@18:24:04 GMT

সাহ্‌রির ফজিলত ও বরকত

Published: 2nd, March 2025 GMT

সাহ্‌রি রোজা রাখার জন্য সহায়ক, সাহ্‌রির সময় জাগ্রত হওয়া রোজার প্রতি আগ্রহের প্রকাশ। সাহ্‌রির সময় প্রশান্তির নিদ্রা পরিহার করে শয্যা ত্যাগ করা প্রকৃতই ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতি অনুরাগ। এতে শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং তাহাজ্জুত নামাজ আদায়ের সৌভাগ্য লাভ হয়। সাহ্‌রির সময় জাগ্রত হওয়া একপ্রকারের মুজাহাদা বা সাধনাও বটে। এ সময় আল্লাহর রহমত নাজিলের সময়, অগণিত আল্লাহপ্রেমিকের ফরিয়াদ ও দোয়া কবুলের সময়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের সবচেয়ে উত্তম সময়। যাঁরা এ বরকতময় সময় জাগ্রত হয়ে আল্লাহর মহান দরবারে দোয়া করে থাকেন এবং ইস্তিগফার করেন, আল্লাহ তাঁদের স্বীয় ভালোবাসায় ধন্য করেন। এ ধরনের আল্লাহপ্রেমিকদের লক্ষ করে পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন, ‘তারা (মুমিনগণ) রাত্রির শেষ অংশে আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে থাকে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৮)।

সাহ্‌রির বরকতময় ও কল্যাণকর বিভিন্ন দিক রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সুন্নাতের অনুসরণ করা, ইসলামের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, ইবাদতের জন্য শক্তি সঞ্চয় করা এবং তাকওয়া অর্জন করা। স্বাস্থ্য ও মনের অধিক প্রফুল্লতা লাভ করা, ক্ষুধার তাড়নায় সৃষ্ট প্রবৃত্তির বাসনা নিরাময় করা। সাহ্‌রির সময় দোয়া কবুল হয়। সাহ্‌রির সময় অধিক পরিমাণে জিকির–আসকার করা এবং তাহাজ্জুত আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা।

আরও পড়ুন রমজানে ওমরাহর আমল২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সাহ্‌রিতে স্বাস্থ্যসম্মত আহার গ্রহণ করা কাম্য, অধিক পরিমাণে তরল ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত। খাদ্যের গুণাগুণ ও মান যাচাই করে নেওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্য গ্রহণ করতে হবে। দেহ ও মন ভালো থাকলে ইবাদত আনন্দমুখর হবে

কখনো যদি অবস্থা এমন হয় যে ফরজ গোসল করে সাহ্‌রি খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকে; তখন অজু করে বা হাত-মুখ ধুয়ে আগে সাহ্‌রি খেয়ে নিতে হবে। তারপর গোসল করে ফজরের নামাজ আদায় করবেন। কারণ, সাহ্‌রি খাওয়ার জন্য পবিত্রতা ফরজ নয় বরং সুন্নাত; আর নামাজ আদায় করার জন্য পবিত্রতা ফরজ। গোসল ফরজ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গোসল করে নিতে হবে, বিনা ওজরে বেশি সময় অপবিত্র অবস্থায় থাকা সমীচীন নয়; আর রমজানে রোজা অবস্থায় অধিকক্ষণ অপবিত্র থাকা মোটেও বাঞ্ছনীয় নয়, এটি মাকরুহ। সাহ্‌রি খাওয়া সম্ভবপর না হলেও রমজানের ফরজ রোজা রাখতে হবে। নিজেরা সাহ্‌রি খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, অভাবী অসহায় মানুষকে সাহ্‌রিতে সহযোগিতা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.

) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পেট পুরে পানাহার করে পরিতৃপ্ত হলো, তার প্রতিবেশী ÿক্ষুধার্ত অবস্থায় রাত কাটাল, সে মুমিন নয়।’ (তিরমিজি)।

আরও পড়ুনজীবনজুড়ে রমজান২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাওম বা রোজা হলো পানাহার ও যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত থাকা, অল্প আহার করা। তাই সাহ্‌রিতে এত বেশি খাওয়া ঠিক হবে না, যা সিয়াম বা রোজার উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। মনে রাখতে হবে, রমজান যেন ভোজের আয়োজনে পরিণত না হয়। সাহ্‌রিতে স্বাস্থ্যসম্মত আহার গ্রহণ করা কাম্য, অধিক পরিমাণে তরল ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত। খাদ্যের গুণাগুণ ও মান যাচাই করে নেওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্য গ্রহণ করতে হবে। দেহ ও মন ভালো থাকলে ইবাদত আনন্দমুখর হবে।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

আরও পড়ুনরোজার কাজা কী১৪ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র সময় আল ল হ র জন য রমজ ন অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ