গ্যাসসংকটে আশুগঞ্জ সার কারখানায় আবারও ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ
Published: 2nd, March 2025 GMT
উৎপাদন শুরুর ৩৮ দিন পার আবারও গ্যাসসংকটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাস সরবরাহ না থাকায় গতকাল শনিবার রাত থেকে ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গ্যাসের অভাবে টানা ১১ মাস ধরে কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
আশুগঞ্জ সার কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, আশুগঞ্জ সার কারখানায় দিনে অন্তত ১ হাজার ১০০ টন ইউরিয়া উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। এ জন্য প্রতিদিন অন্তত ৪ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। গ্যাসসংযোগ পেলেও চাপ কম থাকায় পুরোদমে ইউরিয়া উৎপাদন করা যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যার পর কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। ফলে রাত থেকে ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ না থাকায় কারখানায় সার উৎপাদন বন্ধ ছিল। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে গত ১৫ নভেম্বর গ্যাস সরবরাহ শুরু করে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। এরপর গত ২৩ জানুয়ারি সার উৎপাদন শুরু হয়। ৩৮ দিন পর আবার কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে আশুগঞ্জ সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি। কারখানার মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) এ বি মাহমুদ প্রশাসন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে পারবেন না বলে জানান।
আশুগঞ্জ সার কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা জানান, কয়েক বছর ধরে বছরের বেশির ভাগ সময় গ্যাস সরবরাহ না পাওয়াসহ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময়ের জন্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন এটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাক প্রকৌশলী জাহিদুর রেজা প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তে আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত এই মৌসুমে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কবে আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে, সেটি সরকারি সিদ্ধান্ত। বাকি চারটি কারখানায় গ্যাস সরবরাহ রয়েছে এবং উৎপাদন চলছে। সরকার যখন গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত দেবে, তখন কারখানায় গ্যাসসংযোগ দেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ ইউর য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।