নাটোরে নিখোঁজের এক দিন পর পুকুর থেকে আরিফুল ইসলাম (৬) নামের এক শিশুশিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে সদর উপজেলার বড়হরিশপুর ইউনিয়নের ঋষির নওগাঁ গ্রামের ফারুক হোসেনের পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

মারা যাওয়া আরিফুল ইসলাম বড়হরিশপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঋষির নওগাঁ গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় লক্ষ্মীপুর সানরাইজ স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুরে বাড়ির পাশে খেলছিল আরিফুল। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনেরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। কোথাও সন্ধান না পেয়ে পরে রাতে তাঁরা থানায় নিখোঁজের বিষয়টি জানান। আজ দুপুরে ফারুক হোসেন তাঁর পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে আরিফুলের লাশ ভাসতে দেখেন। পরে স্বজনেরা গিয়ে আরিফুলের লাশ শনাক্ত করে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।

আরিফুলের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, তাঁর ছেলে গতকাল দুপুরে হঠাৎ নিখোঁজ হয়। খুঁজে না পাওয়ায় পুলিশকে জানানো হয়। আজ দুপুরে ফারুকের পুকুর থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। কাউকে সন্দেহ না হওয়ায় তিনি এ ব্যাপারে থানায় মামলা করেননি। মরদেহ দাফন করেছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ শিশু আরিফুলের লাশ উদ্ধার করে। তবে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ফ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা