রমজানে লেবু, বেগুনসহ কয়েকটি পণ্যের দরে অস্বস্তি। সঙ্গে ভোজ্যতেল নিয়ে শুরু হওয়া ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলতে থাকায় বিপাকে ভোক্তারা। তাদের অভিযোগ, সরকারের দুর্বল তদারকির কারণে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট রয়েছে। সেটিকে কাজে লাগিয়ে মুনাফা লুটছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তবে সরকারি সংস্থাগুলোর দাবি, অন্য সময়ের তুলনায় এবার রমজানে বেশির ভাগ পণ্যের দাম নাগালে রয়েছে।
গতকাল রোববার প্রথম রোজায় রাজধানীর হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার, তেজকুনিপাড়াসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে মুদি ও ইফতার সামগ্রীর দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। কেনাকাটা করতে আসা মানুষ কিছু পণ্যের সংকট ও দাম নিয়ে বিরক্ত বলে জানান।
বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়ায়নি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। গত দুই-তিন মাস পণ্যটি নিয়ে লুকোচুরি করছেন খুচরা, পাইকারি থেকে পরিশোধন কোম্পানিগুলো। বাজারে বোতলজাত তেল নিয়ে চলছে ইঁদুর বিড়াল খেলা। বেশির ভাগ দোকানে নেই পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেল। অনেকে লুকিয়ে রেখে ৮৫২ টাকার বোতল ছাড়ছেন ৮৭০-৮৮০ টাকায়। এক, দুই লিটারের বোতলও খুব কম। সংকটে চড়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দাম। ১৫৭ টাকার খোলা সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়। ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ছোট ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে দায় সারলেও, বাড়ছে না সরবরাহ।
গতকাল হাতিরপুল বাজারে তেল কিনতে গলদঘর্ম বেসরকারি চাকরিজীবী শাহ আলম জানান, পাঁচ দোকান ঘুরেও বোতলের তেল পাননি। বাধ্য হয়ে বেশি দামে খোলা সয়াবিন তেল কিনেছেন। সরকারই বদলেছে, বাজার অসাধু চক্রেই জিম্মি রয়েছে। তদারকি না বাড়ালে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেবেন। মানুষ অতিষ্ঠ হবে, মনে করেন তিনি।
এক মাস ধরে মানভেদে ছোলা ১০৫-১২০ ও চিনির কেজি ১১৮-১২০ টাকা। গত রোজায় চিনির কেজি ঠেকেছিল ১৪০-১৫০ টাকায়। রাজধানীর পান্থপথের রয়েল বেঙ্গল ইফতারি বাজারের বিক্রয়কর্মী আবু তাহের বললেন, রোজায় আমরা শাহি ৪৫০ ও বোম্বে জিলাপি ৩০০ টাকা বিক্রি করছি। গত রোজায় ছিল ৫০০ ও ৪০০ টাকা।
বাজারে বেড়েছে তরমুজের সরবরাহ। প্রথম রোজায় বেচাকেনাও ভালো। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকায়। পাকা পেঁপের দর বাড়তি, কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়।
বাজারে প্রচুর বেগুন রয়েছে। মানভেদে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। এক সপ্তাহ ব্যবধানে বেগুন কেজিতে ২০-৩০ টাকা বাড়লেও গত রোজার তুলনায় কম। গেলবার ১০০ থেকে ১২০ টাকায় চড়েছিল বেগুন। এবার আলু কেনা যাচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, যা গতবার ছিল ৩০ টাকার ওপরে।
অবশ্য কম দামের প্রভাব পড়েনি ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ বানিয়ে ফেলা চপ ও বেগুনিতে। কারওয়ান বাজারের ইফতারি ব্যবসায়ী খালেক মিয়া জানান, কয়েক বছর ধরেই আলুর চপ ও বেগুনির পিস ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। দাম কম না রেখে তারা গতবারের তুলনায় আকার বড় করছেন বলে জানান।
বেগুনের মতো বাজারে ভরপুর শসা দেখা গেছে। তবে কোনো কোনো এলাকায় অযৌক্তিকভাবে বেড়েছে শসার দাম। কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি হাইব্রিড শসা ৪০ থেকে ৫০ এবং দেশি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 
মাস দুয়েক আগে ছোট আকারের লেবুর ডজন ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এখন হালিই বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকার আশপাশে। আর মাঝারি আকারের জন্য গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অথচ দুই সপ্তাহ আগেও এ মানের লেবু কেনা গেছে ৪০-৫০ টাকা হালি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজায় শরবতের চাহিদা বেশি। সরবরাহ কম থাকায় লেবুর দাম বেড়েছে। তেজকুনিপাড়ার ব্যবসায়ী মহিন সরকার বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। রমজানে প্রায় সবাই লেবু কেনেন। এরই প্রভাব পড়েছে বাজারে।
গত রোজায় পেঁয়াজের কেজি ১১০ থেকে ১৩০ টাকায় উঠেছিল। এবার কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। অন্যান্য পণ্যের দরও অনেকটা স্বাভাবিক। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান গতকাল কারওয়ান বাজার ও নিউমার্কেট পরিদর্শন করেন। তদারকি শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, রমজানে কিছু পণ্যের দাম যৌক্তিকভাবেই বাড়বে। এগুলোর মৌসুম নয়। আবার ভোক্তাদের কেউ কেউ প্রয়োজনের বেশি কেনাকাটা করেন, যার প্রভাব বাজারে পড়ে। এর পরও এবার বেশির ভাগ পণ্যের দাম নাগালে রয়েছে।
ভোজ্যতেলের সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত তেল সরবরাহের আশ্বাস দিলেও কথা রাখেনি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি হচ্ছে।’ৎ

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক রওয় ন ব জ র ভ জ যত ল ব যবস য় সরবর হ গত র জ রমজ ন ইফত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য ৭ শতাংশ কমবে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পণ্যমূল্য আরও ৭ শতাংশ কমবে। এ দাম হবে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো ৮ শতাংশের ঘরে। যদিও একসময় তা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষকে এখনো বাড়তি দামেই পণ্য ও সেবা কিনতে হচ্ছে। আগামী বছর নিত্যপণ্যের দাম কমবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব কম।

বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে জ্বালানির দাম কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে তারা। সেগুলো হলো চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দামে বড় ধরনের পতন ঘটা। খাদ্যপণ্যের দাম বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে, কিন্তু বছরের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পানীয় পণ্যের দাম হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। মূলত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে মানুষ সোনার দিকে ছুটেছেন।

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে কৃষিপণ্য, খাদ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। চলতি বছরেও এসব পণ্যের দাম কমেছে।

জ্বালানি তেল

বিশ্বব্যাংকের ২০২৬ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়লেও তেলের দাম কমে যাবে এবং সেই প্রভাবকে ছাপিয়ে যাবে। ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম হতে পারে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬৮ ডলার; ২০২৪ সালের ৮১ ডলারের তুলনায় যা বেশ কম। ২০২৬ সালে এই দাম আরও কমে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬০ ডলারে নামতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির হার আরও কমবে—মূলত চীনের চাহিদা কমে যাওয়া, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির দ্রুত প্রসার ও বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজারে সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৬ সালে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের সর্বোচ্চ মাত্রার তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি হবে এ সরবরাহ।

কৃষিপণ্য

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের মূল্যসূচক ২০২৫ সালে স্থিতিশীল আছে। ২০২৬ সালে তা সামান্য ২ শতাংশ ও ২০২৭ সালে আরও ১ শতাংশ কমবে।

খাদ্যপণ্যের দাম, যেমন শস্য, তেল, প্রোটিনজাত খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম সাম্প্রতিক সীমার কাছাকাছি থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য কিছুটা ওঠানামা থাকবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির হার আবার দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতায় ফিরে আসছে।

২০২৫ সালের বাকি সময়ে সয়াবিনের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে সয়াবিন সাধারণত চীনে রপ্তানি হয়, তা এবার কম দামে অন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্রে হচ্ছে এই সয়াবিন। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কিনছে না। ফলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে এই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন চাষের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে ব্রাজিল তার সয়াবিন আবাদ আরও বাড়ানোর পথে রয়েছে। পানীয় পণ্যের দাম ২০২৬ সালে ৭ শতাংশ ও ২০২৭ সালে প্রায় ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চলতি বছর সারের দাম সামগ্রিকভাবে ২১ শতাংশ বাড়তি। চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা ও কিছু অঞ্চলে সরবরাহ–ঘাটতির কারণে এ দাম বেড়ে যাওয়া। ২০২৬ ও ২০২৭ সালে দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমতে পারে। তবু ২০১৫-১৯ সালের গড় দামের তুলনায় তা অনেক বেশি থাকবে। এর কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও চলমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা।

চীন ইতিমধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট সার রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। অন্যদিকে পটাশ সরবরাহকারী বড় দেশ বেলারুশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। রাশিয়া ও বেলারুশ—উভয় দেশই সারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরোপিত নতুন শুল্কের সম্মুখীন।

দেশে কেন দাম বেশি

বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার দাম না কমার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। গত তিন বছরে ডলার দাম অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অনেক আমদানি পণ্যে শুল্ক বেশি বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম কমছে না। বাজারে চাহিদা কত বা কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যের ঘাটতি আছে। ফলে সময়মতো পণ্য আমদানি হয় না।

আরেকটি বিষয় হলো দেশে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, তার অনেক কিছু উৎপাদিতও হয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের সরবরাহে টান পড়েছে। বাজারের পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তিন বছর আগে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে আমদানির ঋণপত্র খোলাও কমেছে। এতে আমসদানিতে চাপ পড়ছে।

দেশের বাজার উচ্চ মূল্যের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয়, শুল্ক ও করের চাপ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত অতি মুনাফা ও অস্বচ্ছ বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের কারণেও বাজারে কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাসের সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পড়ছে না।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। পণ্য পরিবহন ও আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরবরাহ শৃঙ্খল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

দেশে তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সম্প্রতি তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত আগস্ট মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প