Prothomalo:
2025-09-18@03:32:45 GMT

দ্রুত দক্ষ জনবল নিয়োগ দিন

Published: 3rd, March 2025 GMT

বাংলাদেশে চিকিৎসাসেবা পাওয়া ব্যক্তিকে তাঁর পকেট থেকে ৭৩ শতাংশ ব্যয় করতে হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় যা সর্বোচ্চ। ফলে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে অনেকের জীবনমান দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়। এর মূল কারণ হলো রোগীর অবস্থা একটু জটিল হলেই তাঁকে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। সরকারি হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যয়ের ব্যবধানটা অনেক বেশি। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলেই এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

দুঃখজনক হলেও সত্যি, চিকিৎসাসেবাকে বিকেন্দ্রীকরণ করার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাসপাতালসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও কিংবা চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের জন্য আধুনিক সরঞ্জাম কেনা হলেও চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলসংকটে সেগুলো ঠিকমতো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে একদিকে দামি চিকিৎসা সরঞ্জাম এমনি এমনি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে রোগীরা কম খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার এই অপরিকল্পিত চিত্রের একেবারে জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি। প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, আধুনিক এই সরকারি হাসপাতালে চিকিত্সক ও দক্ষ জনবলের অভাবে এখনো কয়েকটি বিভাগে যন্ত্রপাতি সচল করা সম্ভব হয়নি। অথচ হাসপাতালটির বহির্বিভাগে গড়ে ২ হাজার ৫০০ জন ও অন্তর্বিভাগে ৫৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন।

৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে ৪টি উন্নত আইসিইউ শয্যা, ভেঙে যাওয়া হাত-পায়ে কৃত্রিমভাবে অস্ত্রোপচার করে রড সংযোজনের জন্য রয়েছে আধুনিক সিআরএম যন্ত্র, চোখের চিকিৎসার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক ল্যাসিকস যন্ত্র। অথচ এগুলো চালানোর মতো লোকবল নেই। হাসপাতালটিতে সাত কোটি টাকা দামের সিটি স্ক্যান যন্ত্র সচল রাখা হয়েছে অন্য বিভাগ থেকে জনবল ধার করে এনে।

কোভিড মহামারি ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় আমরা দেখেছি সংকটাপন্ন রোগীদের জীবন বাঁচাতে আইসিইউ বেড কতটা দরকারি। একটা আইসিইউ বেডের জন্য মানুষের হাহাকার, আর্তির কথা আমাদের নীতিনির্ধারকেরা নিশ্চয়ই বিস্মৃত হননি। প্রশ্ন হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার পরও কেন ঢাকার বাইরে সরকারি হাসপাতালগুলো পুরোদমে চালু করা যাবে না?

এম মনসুর আলী হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পাশাপাশি ৫০ শতাংশ চিকিৎসক ও দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এ বিপুল জনবল ঘাটতি নিয়ে একটা হাসপাতাল ঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। হাসপাতালটিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিন। সবকিছু থাকা সত্ত্বেও মানুষ কেন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে ওষুধ নেই, চিকিৎসক নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। ফলে তেমন একটা রোগীও নেই। এই ‘নাই নাই’ হাসপাতালটির নাম মাস্টারদা সূর্য সেন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়ার এমন নমুনা আমাদের হতাশ করে। দেশজুড়ে এ রকম আরও চিত্র আমরা দেখতে পাই, যা আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেয় না।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ১০ শয্যার হাসপাতালটির মূল সমস্যা জনবলসংকট। ১৬টি পদের ১টিতেও স্থায়ী জনবল পদায়ন করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে প্রেষণে এসে মাত্র তিনজন কর্মচারী (একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন মিডওয়াইফ ও একজন আয়া) সপ্তাহে কয়েক দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি জরুরি প্রসূতিসেবাকেন্দ্র, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, ডাক্তার নেই এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম এখন প্রায় স্থবির।

হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় মাস ধরে। এ পরিস্থিতিতে একজন রোগী কীভাবে এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবেন? যেখানে হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডে জরুরি প্রসূতিসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা লেখা, সেখানে মূল ফটকে তালা ঝোলানো। এটি জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। হাসপাতালটি চালু না থাকায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল বা চট্টগ্রাম শহরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয় তো বটেই, চরম ভোগান্তিরও শিকার হতে হয় মানুষকে।

যে মিডওয়াইফরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা জানান, এখন মাসে মাত্র চার-পাঁচজন প্রসূতি সেবা নিতে আসেন, যেখানে আগে শতাধিক প্রসূতি সেবা পেতেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তবু নিয়মিত বেতন পাওয়ার আশায় তাঁরা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, তাঁরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবলসংকটের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।

একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিতে হবে? জনবল নিয়োগ, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বিদ্যুতের ব্যবস্থা কার্যকর করা—সব ধরনের সংকট দূর করতে হাসপাতালটির দিকে আন্তরিক মনোযোগ দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনবল নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পদ ৪৩০
  • হাতে ভোট গণনাসহ ছাত্রদলের ৬ দাবি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত
  • ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে
  • যে হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ, বিদ্যুৎ–সংযোগ কিছুই নেই